অফশোর কোম্পানি খুলে দুবাইয়ে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার অধিকতর তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছে দুদক। 

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ সৈয়দ কামাল হোসেনের আদালতে এ আবেদন করেন দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মদ আলী সালাম। আগামী ১ ডিসেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। 

দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মদ আলী সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুদক তদন্ত প্রতিবেদনে কিছু ঘাটতি খুঁজে পেয়েছে কমিশন। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্ত করা প্রয়োজন। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ এ আবেদন করা হয়েছে। এ মামলায় ফালুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করেন আদালত। এ সময় ফালু পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গ্রেপ্তার সংক্রান্ত  প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ওই দিন রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত।

এরপর চলতি বছরের ২৪ মার্চ ফালুকে পলাতক দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পত্রিকায় প্রজ্ঞাপন প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। 

মামলার অপর দুই আসামি আরএকে সিরামিকস লিমিটেডের ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএকে ইকরামুজ্জামান এবং স্টার সিরামিকস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান জামিনে আছেন।
 
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। 

অভিযোগপত্রে বলা হয়, মোসাদ্দেক আলী ফালু, একরামুজ্জামান ও আনোয়ারুজ্জামান ২০১০ সালে দুবাইয়ে আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, থ্রি-স্টার লিমিটেড, ডেভেলপমেন্ট ইউএই নামে অফশোর কোম্পানি খোলেন। এরপর তারা বাংলাদেশে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা দুবাইয়ে পাচার করেন। দুবাইয়ে ওই অর্থ উপার্জনের কোনো উৎস তারা দেখাতে পারেননি।

২০১৯ সালের ১৩ মে উত্তরা পশ্চিম থানায় ফালু ও অন্য তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুবাইয়ে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে দুদক।

মামলার এজাহারে বলা হয়, দুবাইয়ে পাচার করা ওই অর্থ উপার্জনের কোনো উৎস তারা দেখাতে পারেননি। ওই অর্থ কীভাবে উপার্জন করা হয়েছে তার কোনো তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে নেই। দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে কখনও জানাননি বা কোনো ধরনের অনুমতি নেননি। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে মোসাদ্দেক আলী ফালু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় দেশে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করে অফসোর কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এনআর/এসকেডি