স্কুলছাত্রের মৃত্যু
চিকিৎসকের অবহেলা খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠনের নির্দেশ
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের খিদমাহ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় খাদ্যনালি ছিদ্র হয়ে স্কুলছাত্র তরিকুল ইসলাম তোহার মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকের অবহেলা আছে কি না, তা অনুসন্ধান করতে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যানকে এ কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে কমিটিতে রাখতে বলা হয়েছে। চিকিৎসক ডা. মো. জাহাঙ্গীর কবীরের অবহেলার বিষয়টি অনুসন্ধান করে কমিটিকে আগামী বছরের ৩০ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি, ঢাকার ডিসি, খিদমাহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডা. মো. জাহাঙ্গীর কবীরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক, ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার ও অ্যাডভোকেট মুনতাসীর মাহমুদ রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ভুল চিকিৎসায় খাদ্যনালি ছিদ্র হয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র তরিকুল ইসলাম তোহা ওরফে প্রিন্সের মৃত্যু হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৮ ডিসেম্বর খিলগাঁওয়ের খিদমা হাসপাতালে প্রিন্সের পিত্তথলির পাথর অপসারণ করা হয়। রাত ১২টার দিকে অপারেশন করেন ক্যানসার হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর কবির। তবে অপারেশনের পর জটিলতা দেখা দেয়। এ অবস্থায় পর দিন তাকে জোর করে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। বাসায় ফিরে প্রিন্সের অবস্থার আরও অবনতি হলে ২১ ডিসেম্বর খিদমা হাসপাতালে তাকে আবারও নেওয়া হয়। স্বজনদের অভিযোগ, প্রিন্স মুমূর্ষু অবস্থায় চলে গেলেও ডা. জাহাঙ্গীর কবির পাত্তা দেননি।
প্রিন্সের মা পারভীন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, জাহাঙ্গীর কবির অবস্থা জেনে রক্তের টেস্ট ও আলট্রাসনোগ্রাম করতে বলেন। কিন্তু হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা ২১ ডিসেম্বর রাতে টেস্ট করতে দেয়নি। প্রিন্সের অবস্থা আরও অবনতি হলে মধ্য রাতে খিদমা হাসপাতাল থেকে বলা হয়, প্রিন্সের আইসিইউ লাগবে। স্থানান্তর করতে হবে অন্য কোনো হাসপাতালে। দিশেহারা হয়ে স্বজনরা তাকে শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেন। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, তার অবস্থা খুবই খারাপ। বেশ কিছু পরীক্ষার পর দেখা যায়, তার খাদ্যনালিতে বড় ধরনের ছিদ্র হয়ে ভেতরে পানি জমেছে। পানির সঙ্গে খাবারও গেছে। এরপর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে দুই দফা অপারেশন হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। এ ঘটনায় গত ১ সেপ্টেম্বর তরিকুল ইসলাম তোহার বাবা আবুল কাশেম পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট দায়ের করেন।
এমএইচডি/এসকেডি