প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে সার্চ কমিটির কাছে কে কার নাম প্রস্তাব করেছে, সে তথ্য না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শরীফ ভুঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পরে আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির কাছে কে কার নাম প্রস্তাব করেছে তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর তথ্য অধিকার কমিশনে আবেদন করা হয়। কমিশন এসব তথ্য ‘ব্যক্তিগত’ উল্লেখ করে আবেদনটি খারিজ করে দেয়। কিন্তু যাচিত তথ্য ব্যক্তিগত হলে কীভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তা আইনে বলা আছে। কমিশন সে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। 

তিনি বলেন, যাচিত অনেকগুলো তথ্যের মধ্যে কোনো তথ্য ব্যক্তিগত হলে সেটুকু বাদ দিয়ে যেটুকু ব্যক্তিগত নয় সেটুকু তথ্য দিতে হবে। কিন্তু কমিশন কোনো তথ্যই দেয়নি। শুনানিতে আমরা দেখিয়েছি, কোনো তথ্য না দিয়ে কমিশন সংশ্লিষ্ট আইনের একাধিক ধারা লঙ্ঘন করেছেন। তখন আদালত বলেছেন, এটি না করলে আদালতে রিট আবেদন নিয়ে আসতে হতো না।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি সুপারিশে সার্চ কমিটির কাছে প্রস্তাবিত নাম ও প্রস্তাবকারীদের পূর্ণ তথ্য চেয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অধিকার অধিশাখায় আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বদিউল আলম মজুমদার।

কিন্তু ১ মার্চ সংশ্লিষ্ট অধিশাখা এসব তথ্য সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করে। এর বিরুদ্ধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করেন সুজন সম্পাদক। 

নির্ধারিত সময়ে এর জবাব না পেয়ে তথ্য কমিশনে অভিযোগ করেন তিনি। যাচিত তথ্য প্রদানযোগ্য নয় উল্লেখ করে গত ৭ জুন অভিযোগ খারিজ করে দেয় তথ্য কমিশন। পরে কমিশনের এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গত ২৩ জুন বদিউল আলম মজুমদারসহ চার ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে বিভিন্ন উৎস থেকে সার্চ কমিটিতে আসা ৩২২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে তালিকাটি প্রকাশ করা হয়।

পরে ২২ ফেব্রুয়ারি ১০টি নাম চূড়ান্ত করে ২৪ ফেব্রুয়ারি তা রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেয় সার্চ কমিটি। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রস্তাবিত এই ১০ নাম থেকে নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে প্রস্তাবকারীদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। পরে সেই নামগুলো থেকে ইসি গঠন করা হয়।

এমএইচডি/এসএম/ওএফ