পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে লিগ্যাল নোটিশ
‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দিয়ে শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
রোববার (২১ আগস্ট) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. এরশাদ হোসেন রাশেদ এ নোটিশ পাঠান।
বিজ্ঞাপন
নোটিশে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে আপনি ভারত সরকারকে যে অনুরোধ করেছেন, এটা আপনি করতে পারেন না। কারণ সংবিধানে বলা হয়েছে, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। আপনি সংবিধানবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। আপনি মন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
আইনজীবী এরশাদ হোসেন রাশেদ বলেন, ১৯ আগস্ট বিকেলে গণমাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত বিষয়ক বক্তব্যের তথ্য পান। ১৮ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। এর মাধ্যমে তিনি তার শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তার এ বক্তব্য সার্বভৌমত্মকে আঘাত করেছে। তাই নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলেছি। অন্যথায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন : ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গত ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছে। তিনি বলেন, আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) গোপালগঞ্জের টুঙ্গি পাড়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে। সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারতকে অনুরোধ করার ব্যাখ্যায় ড. মোমেন বলেন, আমি বলেছি, আমরা চাই শেখ হাসিনার স্থিতিশীলতা থাকুক। এই ব্যাপারে আপনারা (ভারত) সাহায্য করলে আমরা খুব খুশি হব।
আরও পড়ুন : বন্দুকের গুলি আর মন্ত্রীর বুলি
এর আগে, গত ১২ আগস্ট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, বৈশ্বিক মন্দায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে। দেশের মানুষ ‘বেহেশতে’ আছে।
মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে দেশজুড়ে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা হয়। এর দুই দিনের মাথায় গত ১৪ আগস্ট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলের সঙ্গে বৈঠকের পর ড. মোমেন গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, আমি তো ট্রু সেন্সে ‘বেহেশত’ বলিনি। কথার কথা। কিন্তু আপনারা সবাই আমারে খায়া ফেললেন।
ওইদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন, ভবিষ্যতে কথা বলার সময় সাবধান হবেন।
এমএইচডি/এসএম