ভুয়া চিকিৎসকের সাজা যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডের বিধান চেয়ে রিট

ভুয়া চিকিৎসকের সাজা যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ড সহ যথেষ্ট পরিমাণ আর্থিক জরিমানার  বিধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।

আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রিটে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর ধারা ২৮(৩) ও ২৯(২) সংশোধন করে ভুয়া ডাক্তারের সাজা ৩ বছর ও জরিমানা ১ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ডসহ জরিমানা বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে।

একইসঙ্গে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে বিবাদীদের বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর ধারা ২৮(৩) ও ২৯(২) সংশোধন করে ভুয়া ডাক্তারের সাজা ৩ বছর ও জরিমানা ১ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ডসহ জরিমানার সুপারিশ করা হবে না, এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে রিটে।

আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার সহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে রিটে।

জে আর খাঁন রবিন বলেন, ‘বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫(ক) ও ১৮(১)অনুচ্ছেদ অনুযায়ী স্বাস্থ্য সেবা ও জনস্বাস্থ্যের কথা উল্লেখ থাকলেও অনুচ্ছেদ ৩১ ও ৩২ অনুযায়ী মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য সেবা একটি মৌলিক অধিকার। মানুষের এ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডাক্তারদের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু বর্তমানে অনেক ভুয়া ডাক্তার নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করছে। শুধু তাই নয় দেশের সাধারণ মানুষ এ সব ভুয়া ডাক্তারদের কাছে গিয়ে প্রতিনিয়ত নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এমনকি শারীরিক ভাবে স্থায়ী অক্ষমতাসহ অনেকেই মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে।

অথচ বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইনের ধারা ২৮(৩) অনুযায়ী যদি কেউ ইচ্ছা করে নিজেকে নিবন্ধিত হওয়া একজন মেডিক্যাল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক বলে প্রতারণা করেন অথবা প্রতারণামূলক ভাবে তার নাম বা পদবীর সঙ্গে নিবন্ধনকৃত মর্মে কোনো শব্দ,বর্ন বা অভিব্যক্তি ব্যবহার করেন তার মিথ্যা পরিচয় দ্বারা কোনো ব্যক্তি প্রতারিত না হলেও তার জন্য তিনি ৩ বছর কারাদণ্ড অথবা ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডের অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।অন্যদিকে উক্ত আইনের ধারা ২৯ অনুযায়ী কেউ অনুমোদিত মেডিক্যাল কলেজ অথবা প্রতিষ্ঠান হতে এম.বি.বি.এস অথবা বি. ডি.এস ডিগ্রি অর্জন না করে  তার নামের পূর্বে ডাক্তার উপাধি  ব্যবহার  করলেও অনুরূপ সাজার বিধান রয়েছে।

জে আর খাঁন রবিন আরও বলেন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (সি) ধারা অনুযায়ী খাদ্য ও ঔষধ তৈরি বা বিক্রির জন্য মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীন কারাদণ্ড অথবা ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড সহ জরিমানার  বিধান রয়েছে। মানুষের সার্বিক ক্ষতির দিক বিবেচনা করে ওই সাজা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু একজন ভুয়া ডাক্তারের চিকিৎসার কারণে মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় সাজা অত্যন্ত নগণ্য। এ কারণে ভুয়া চিকিৎসকদের সাজা মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন চাওয়া হয়েছে রিটে।

এমএইচডি/এসএম