ডেসটিনির হারুন ইস্যুতে হাইকোর্টে আইনজীবীদের বাগবিতণ্ডা
ডেসটিনির হাজার কোটি টাকার অর্থপাচারের মামলায় চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের মেডিকেল বোর্ড গঠনের আবেদনের শুনানিতে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন আইনজীবীরা।
বুধবার (২৯ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
‘ভিআইপি আসামিরা প্রিজন সেলকে রিসোর্ট বানিয়ে ফেলছেন’ দুদক আইনজীবীর এমন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।
শুনানিতে হারুনের আইনজীবী মাইনুল ইসলাম বলেন, উনি খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। সেনাপ্রধান ছিলেন। ছিলেন রাষ্ট্রদূত। হয়তো কোনো কারণে তিনি আজ অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে আছেন। উনার নানা শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তলবের আবেদন করছি।
জবাবে দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, গত ১২ মে বিশেষ জজ আদালতের রায়ে দণ্ডিত হয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান হারুন। যেদিন রায় হয়েছে ওই দিনই তিনি প্রিজন সেলের ভিআইপি কেবিনে যান। এখন তো দেখা যাচ্ছে প্রিজন সেল কক্সবাজারের রিসোর্টে পরিণত হয়েছে। কারণ ভিআইপি আসামিরা কারাগারে না থেকে প্রিজন সেলে থাকেন। আপনারা (কোর্ট) যদি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেন তাহলে ‘ফ্লাডগেট’ ওপেন হয়ে যাবে।
জবাবে হারুনের আরেক আইনজীবী রবিউল আলম বদু দুদক আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, মানুষকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে শিখুন। প্রিজন সেলকে আপনি রিসোর্ট বলতে পারেন না। কারণ প্রিজন সেলও কারাগার। হারুন অর রশীদের বয়স ৭৫ বছর। উনি সেনাপ্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার নাম শুনলেই আপনার গায়ে জ্বালা ধরে কেন?
এ পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিনউদ্দিন মানিক বলেন, হারুন অর রশীদ এখন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি। উনি সম্মানিত ছিলেন এটা এখন দেখার সুযোগ নেই। উনার নাম ব্যবহার করে ডেসটিনি লাখ লাখ মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পাচার করেছে। যারা অর্থ দিয়েছেন তারা এখন নিঃস্ব। আমরা হাইকোর্ট থেকে মেডিকেল বোর্ড গঠনের জোরালো বিরোধিতা করছি।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে হাইকোর্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করে হারুন-অর-রশিদের শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন। আদেশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই বোর্ড গঠন করে রিপোর্ট হাইকোর্টে পাঠাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি ও কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এমএইচডি/ওএফ