বাংলালিংকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করলেন জেমস
কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে টেলিকম অপারেটর বাংলালিংকের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করেছেন দেশের শীর্ষ সংগীত তারকা জেমস।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে হাজির হয়ে মামলা প্রত্যাহার করেন তিনি। জেমস এবং মামলার আসামিরা আদালতকে জানান, তারা আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় এসেছেন।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জেমস গত বছরের ১০ নভেম্বর কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, জেমসের বেশকিছু গান বাংলালিংক কলার টিউন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে এবং বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করছে, যা কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন।
মামলার আসামিরা হলেন—বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এরিক অ্যাস, চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার এম নুরুল আলম, চিফ কর্পোরেট রেগুলেটরি অফিসার তৈমুর রহমান ও হেড অব ভ্যাস অনিক ধর।
তুমুল জনপ্রিয় গায়ক জেমস এদেশের ব্যান্ড মিউজিকের উজ্জ্বল নক্ষত্র। আশির দশকের শুরুতে চট্টগ্রামে সঙ্গীত জীবন শুরু তার। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন। সঙ্গে আসে ব্যান্ড ‘ফিলিংস’। প্রকাশ করে প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’। প্রথম অ্যালবাম দিয়ে সেই সময় স্পটলাইটে চলে আসে ব্যান্ডটি।
১৯৮৭ সালে প্রকাশ পায় ‘অনন্যা’, জেমসের প্রথম একক অ্যালবাম। আসিফ ইকবালের লেখা অ্যালবামের প্রতিটি গানে যেন নতুন এক জেমসের জন্ম হয়। আশির দশকের শেষে শুরু হয় তারকা জেমসের যাত্রা। ১৯৯৩ সালে বের হয় ‘জেল থেকে বলছি’। প্রতিটি অ্যালবাম জেমসকে একটু একটু করে নিয়ে যায় শীর্ষ অবস্থানে। ‘ফ্লপ’ শব্দটি নেই জেমসের ক্যারিয়ারে।
‘ফিলিংস’ থেকে জেমস আরও তিনটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ‘নগর বাউল’, ‘লেইস ফিতা লেইস’ ও ‘কালেকশন অব ফিলিংস’- প্রতিটি অ্যালবামই সুপার হিট। এরমধ্যে প্রকাশ পায় জেমসের আরও তিনটি একক অ্যালবাম। সেগুলো হলো- ‘পালাবো কোথায়’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’ ও ‘ঠিক আছে বন্ধু’।
ব্যান্ড সঙ্গীত নিয়ে বিতর্কিত ধারণা কমতে থাকে নব্বই দশকে। ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’র টাইটেল গানটি জেমসের একক জনপ্রিয়তাকে শীর্ষে নিয়ে যায়। ‘কালেকশন অব ফিলিংস’-এর পর জেমস গড়েন নতুন ব্যান্ড। নাম ‘নগর বাউল’। কিন্তু ‘ফিলিংস’ ছেড়ে দেওয়ার পর জেমস মনযোগী হন একক ক্যারিয়ারে। ‘নগর বাউল’ থেকে প্রকাশ পায় মাত্র দুটি অ্যালবাম- ‘দুষ্টু ছেলের দল’ ও ‘বিজলি’।
বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বলিউডেও জনপ্রিয় হন জেমস। ২০০৫ সালে ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমার ‘ভিগি ভিগি’ দিয়ে বলিউডে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়। এরপর ২০০৬ সালে ‘চল চলে’, ২০০৭ সালে ‘আলবিদা’ এবং ২০১৩ সালে প্রকাশ পায় ‘বেবাসি’ গানগুলো।
ব্যক্তিজীবনকে সামনে আনতে চান না তিনি। তাই তার সম্পর্কে ভক্তদের জানাশোনাও কম। জেমসের স্ত্রী বেনজির সাজ্জাদ। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে দানেশ। দুই মেয়ে জান্নাত ও জাহান।
সাম্প্রতিক সময়ে জেমসের নতুন গান প্রকাশের সংখ্যা খুবই কম। তবে পুরোনো গানেই ভক্তদের মনে এখনো সমান দোলা দেন তিনি। জেমসের গানের সুরক্ষায় সমর্থন জানাচ্ছেন ভক্তরা।
এসএসএইচ