বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ। দরকার যুতসই একটি চাকরি। প্রথম দুইটি লাইন প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু চাকরির বাজারের তুলনায় চাকরি প্রত্যাশীর সংখ্যা অনেকগুণ বেশি। ফলে কিছুটা কৌশলী হয়ে চাকরি না খুঁজলে, সোনার হরিণটা মিলবে না। এই কৌশল নিয়েই আজকের আয়োজন-

ভালো প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করুন

কোন ওয়েব সাইটে গেলে ভালো চাকরি পাওয়া যায়- এই প্রশ্নের উত্তর ইন্টারনেটে সার্চ করলেই মিলবে। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্যাংক, কোম্পানি, নেটওয়ার্কিং সাইট রয়েছে। জানা যাবে, কোন প্রতিষ্ঠান কেমন সুযোগ-সুবিধা দেয় সেই সম্পর্কেও। একইসঙ্গে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করার সময় চাকরির বিষয় ফোকাস করুন। কোন বিষয়ে আপনার আগ্রহ রয়েছে এবং কোথায় আপনি কাজ করতে চান সেই বিষয়গুলো খেয়াল করুন। জব সার্চ স্পষ্ট হতে হবে। চাকরি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা অতীব প্রয়োজন। 

নিজের ব্র্যান্ডিং করুন

লিঙ্কডইন ও অন্যান্য নেটওয়ার্কিং সাইটে অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে নিজের ব্র্যান্ডিং করুন। লিঙ্কডইনের মাধ্যমে অনেকেই নতুন চাকরির সন্ধান পেয়ে থাকেন। লিঙ্কডইনের মাধ্যমে চাকরির বাজারে শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং করা সম্ভব। 

যোগাযোগ বাড়ান

নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে প্রোফাইল তৈরি করার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব। আপনার নেটওয়ার্কের সবাইকেই প্রোফাইলে কানেক্ট করে নিলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। যদি আপনি গ্র্যাজুয়েট হয়ে থাকেন তাহলে নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে অ্যালামনাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করে আপনি কি কোনো পেশাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন? ক্যারিয়ারের জন্য এটি অনেক উপকারী। 

ব্যবহার করুন জব সার্চ অ্যাপ ও টুল

চাকরি খোঁজার জন্য এখন ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন জব সার্চ অ্যাপ ও টুল। এসব অ্যাপ ও টুল ভালো একটি ক্যারিয়ার তৈরিতে সাহায্য করে। জব সার্চিংয়ের কাজে এসব অ্যাপ ও টুল ব্যবহার করা যেতে পারে। স্মার্ট ফোন ও ট্যাবলেটেও এসব অ্যাপ ব্যবহার করে চাকরি খোঁজা সম্ভব। 

পছন্দের প্রতিষ্ঠানের তালিকা করুন

আপনার পছন্দের প্রতিষ্ঠান রয়েছে কি? যদি না থাকে, তাহলে সব কোম্পানির তথ্য জেনে নিয়ে নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করুন। ইন্টারনেটের জব সার্চিংয়ে যেসব কোম্পানির নাম দেখা যায় সেগুলো সম্পর্কে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করুন। সব ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে রয়েছে। তাই একজন চাকরিপ্রার্থীর জন্য চাকরি খোঁজা সহজ হয়ে উঠেছে। এর জন্য ইমেইল থেকে চাকরির আপডেট সম্পর্কে জানতে হবে। 

কভার লেটার ও বায়োডাটা তৈরিতে সময় নিন

আপনার মধ্যে কতটুকু দক্ষতা রয়েছে তা চাকরিদাতারা কীভাবে বুঝবেন? আপনার দক্ষতা আপনাকেই উপস্থাপন করতে হবে। বায়োডাটা ও কভার লেটার কিছুটা সময় নিয়ে তৈরি করলে দক্ষতাগুলো ভালো উপস্থাপন করা যায়। 

প্রস্তুতি নিন ইন্টারভিউয়ের জন্য

ইন্টারভিউয়ের জন্য কিছুটা সময় নিয়ে প্রস্তুতি নেয়া যেতে পারে। আপনি যত প্রস্তুতি নেবেন, আপনার ইন্টারভিউ তত ভালো হবে। যে কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দেবেন সেই কোম্পানি সম্পর্কে আপনি ভালোভাবে জেনে নিন। মার্জিত পোশাক পরুন এবং ইন্টারভিউ বোর্ডে যারা প্রশ্ন করবেন তাদের সামনে যথাযথ উত্তর বলতে চেষ্টা করুন। 

ইন্টারভিউয়ের ফলাফল জানুন

ইন্টারভিউয়ের পর ইন্টারভিউয়ের ফলাফল সম্পর্কে জানা চাকরিপ্রার্থীর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বারবার নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, চাকরিটি আপনি কেন নিচ্ছেন? সব মানুষ ধন্যবাদ পেতে ভালোবাসে। তাই ইমেইলে চাকরির ফলাফল জানানো হলে তাদের থ্যাংকনোট দিয়ে রাখুন। এতে আপনার সম্পর্কে কোম্পানির ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। 

চাকরির অফার গ্রহণ করুন

যখন আপনি চাকরির অফার গ্রহণ করবেন, তখন কিছুটা সময় নিয়ে বিবেচনা করা উচিত। আপনাকে চাকরির অফার দেয়া হয়েছে বলে আপনি চাকরিতে যোগ দেবেন এমন ভাবা ঠিক নয়। যে কোম্পানি আপনাকে চাকরির অফার দিয়েছে সেই কোম্পানি সম্পর্কে খোলাখুলি চিন্তা করুন। মনে রাখতে হবে, বিষয়টি হ্যাঁ বা না-এর সিদ্ধান্ত নয়। বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে এবং নিজের মনমতো হলে চাকরির অফার গ্রহণ করতে হবে।

এইচএকে/ আরআর