সমন্বিত ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত একাধিক সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সিনিয়র অফিসার (জেনারেল), অফিসার (জেনারেল) ও অফিসার (ক্যাশ) পদে মোট ৪৫৫২ জন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েব সাইট থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আরও পড়ুন : সমন্বিত ব্যাংকে ঝামেলা ছাড়াই আবেদন করবেন যেভাবে
বরাবরের মতো এবারও ব্যাংকার্স সিলেকশন কিমিটির সদস্যভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা হবে তিন ধাপে। প্রথম ধাপে থাকবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এই পরীক্ষা সাধারণত এমসিকিউ পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। নম্বর থাকে ১০০। এমসিকিউ পরীক্ষায় উর্ত্তীণদের অংশগ্রহণ করতে হয় লিখিত পরীক্ষায়। দ্বিতীয় ধাপের এই পরীক্ষায় থাকে ২০০ নম্বর। এমসিকিউ পরীক্ষার ফল প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যেই সাধারণত লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এ পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ ২৫ নম্বর। আরও পড়ুন : একাধিক সরকারি ব্যাংকে নিয়োগ দেবে ৪৫৫২ জন
বিজ্ঞাপন
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও কম্পিউটারের ওপর মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন হয়। এ ক্ষেত্রে গণিতে ৩০, ইংরেজিতে ২৫, বাংলায় ২০, সাধারণ জ্ঞানে ১৫ এবং কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তিতে থাকবে ১০ নম্বর।
বিগত সালের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সাধারণত বাংলায় ব্যাকরণ ও সাহিত্যের ওপর প্রশ্ন আসে। বেশি প্রশ্ন হয় ব্যাকরণের ওপর। এ জন্য জন্য নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের ব্যাকরণ বই ভালো করে পড়তে হবে। বিশেষ করে ভাষা, ধ্বনি, বর্ণ, সমাস, কারক ও বিভক্তি, সন্ধিবিচ্ছেদ, বচন, শব্দের প্রকারভেদ, লিঙ্গান্তর, বাক্য, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ নিয়ে বারবার প্রশ্ন আসে। আরও পড়ুন : জনতা ব্যাংকে চাকরির সুযোগ, শূন্য পদ ৩১২
তবে কেবলমাত্র পাঠ্য বইয়ের ওপর নির্ভর করলে হবে না। পাশাপাশি ভালো একটি ব্যাকরণ বইও অনুসর করা উচিত। সাহিত্য অংশে ভালো প্রস্তুতির জন্য বাজারের ভালো মানের একটি গাইড বই অনুসরণ করা যেতে পারে। এছাড়াও সাহিত্য অংশে বিগত সালের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো পড়লে কমন পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পাশাপাশি কবি-সাহিত্যিকদের জীবনী, সাহিত্যকর্ম, তাদের বিভিন্ন কবিতা ও উপন্যাস, উক্তি, বিখ্যাত পত্রিকার সম্পাদকদের নাম ও প্রকাশের সাল, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক, উপন্যাস প্রভৃতি সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। আরও পড়ুন : সমন্বিত চার ব্যাংক নেবে ২২২ জন
এবার আসি ইংরেজি অংশে। ব্যাংক নিয়োগের ক্ষেত্রে ইংরেজি অংশে মূলত দুই ধরনের প্রশ্ন হয়। এক. ভোকাবুলারি, দুই. গ্রামার। ভোকাবুলারি অংশে Synonyms & Antonyms, One word Substitution, Replacing underlined word, Analogy, Odd man out, Spelling, Sentence Completion Group verb, Appropriate preposition, Idioms & Phrase বিষয়গুলো ভালো করে পড়তে হবে। এই টপিকগুলোর বাইরে সাধারণত প্রশ্ন হয় না। আর গ্রামার অংশে Error Finding, Sentence Correction, Correct Sentence Choice, Rearrange Sentence Parts, Grammar Based Fill in the blanks বিষয়ে প্রশ্ন হয়। ফলে এই বিষয়গুলো নিয়মিত অনুশিলন করতে হবে। আরও পড়ুন : সরকারি ৬ প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ
কমবেশি গণিতে ভীতি সবারই আছে। তবে ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে গণিতে ভালো করতেই হবে। এর বিকল্প নেই। গণিতের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংশ থেকে প্রশ্ন আসে। পাটিগণিত অংশে সময় ও কাজ, সময় ও দূরত্ব (নৌকা, ট্রেন), লাভ-ক্ষতি, বয়স, নল ও চৌবাচ্চা, অনুপাত-সমানুপাত, শতকরা, সুদকষা, পরিমাপ ও একক, গড়, অংশীদারিত্ব ও ভাজ্য, মিশ্র ও দ্রবণ, বিন্যাস-সমাবেশ প্রভৃতি। বীজগণিতের রাশিমালা, সূচক, সমীকরণ, লগারিদম, সেট, সিরিজ প্রভৃতি টপিক থেকে প্রশ্ন বেশি এসে থাকে। জ্যামিতির ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বহুভুজ, স্থানাঙ্ক ও দূরত্ব প্রভৃতি। আরও পড়ুন : চলমান ৩৪ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
পরিমিতি ও ত্রিকোণমিতি থেকেও মাঝে মাঝে কিছু প্রশ্ন এসে থাকে। যাদের গণিতের বেসিক বেশি ভালো না, তাদের সপ্তম, অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড গণিত বই প্রথমে অনুশীলন করে গণিতের বেসিক ঝালাই করে নিতে হবে। এ ছাড়া বাজারের ভালো মানের অন্যান্য গণিত বইও অনুশীলন করা যেতে পারে।
সাধারণ জ্ঞান অংশে সাধারণত দুই ধরনের প্রশ্ন হয়। প্রশ্ন আসে সাম্প্রতিক বিষয়গুলো থেকে, আরেক ধরনের প্রশ্ন হয় বিষয়ভিত্তিক স্থায়ী বিষয়ে। তবে বেশি আসে রাজনীতি, নারীনীতি, সমাজনীতি, পরিবেশনীতি, নির্বাচন, খেলাধুলা, পুরস্কার নিয়ে। এছাড়াও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষাবিষয়ক তথ্য, বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিবিষয়ক তথ্য (জিডিপি, মাথাপিছু আয়, মুদ্রা), জাতীয় ব্যাংকের নাম, জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকসহ এদের সব অঙ্গসংগঠন, বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও ব্যাবসায়িক চুক্তি এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ১৯৪৭-১৯৭১ সাল পর্যন্ত ঘটনাবলী নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। নিয়মিত দৈনিক পত্রিকার বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক পাতা, আন্তর্জাতিক পাতা, উপসম্পাদকীয় পাতা ও খেলাধুলার পাতা পড়তে হবে।
কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি অংশে প্রস্তুতির জন্য মাধ্যমিকের কম্পিউটার বইয়ের বিকল্প নেই। উচ্চ মাধ্যমিকের তথ্য-প্রযুক্তি বইটাও বেশ দরকারি। কম্পিউটারের ইতিহাস, কম্পিউটারের প্রকারভেদ, ক্রমবিবর্তন, সংগঠন, সিস্টেম ইউনিট, আউটপুট ইউনিট, মেমোরি, স্টোরেড ডিভাইস, কম্পিউটার বাস, কম্পিউটার সফটওয়্যার, অপারেটিং সিস্টেম, ডাটাবেইস, ডিজিটাল লজিক, সেলুলার ফোন, কমিউটার নেটওয়ার্ক, ক্লাউড কম্পিউটিং, ইন্টারনেট, ই-মেইল, ই-কমার্স, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিলিটি প্রগ্রাম, এমএস ওয়ার্ড, এমএস এক্সেল প্রভৃতি বিষয় থেকে বারবার প্রশ্ন আসে।