চাকরি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার আগে যা জানতেই হবে
বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছেন প্রবাসীরা। যারা বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। আয় রোজগারও ভালো করছেন। এর উল্টো চিত্রও আছে। বিদেশে যাওয়ার জন্য সব কিছু খু্ইয়ে বসে আছেন। প্রতারণার শিকার হয়েছেন, হচ্ছেনও। কিন্তু কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করলে এইসব প্রতারণার হাত থেকে বাঁচা সম্ভব।
কী করবেন?
বিজ্ঞাপন
১। শুধুমাত্র সরকার নিবন্ধিত এজেন্ট বা সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিদেশে যাবার প্রক্রিয়া নিয়ে যেসব সংস্থা কাজ করে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
২। কম খরচে পাসপোর্ট বানানোর জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি দিয়ে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।
৩। বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে আপনার কাজের ধরন, চুক্তি, সুবিধা, ছুটি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।
৪। নির্দিষ্ট দেশে শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি রয়েছে। তাই সে দেশে যেতে সর্বনিম্ন কত খরচ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তার খোঁজ নিতে হবে।
৫। জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোতে নিজের নাম নিবন্ধন করে স্মার্ট কার্ড ও ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হবে।
৬। চাকরিদাতা সংস্থা বা ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে চুক্তিনামা ভালোভাবে পড়ে বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
৭। ওয়ার্ক পার্মিট ছাড়া অবৈধভাবে বহু লোক প্রতি বছর বিদেশে কাজ করতে গিয়ে প্রতারিত হন। তাই চুক্তির আগে বা দেশ ছাড়ার আগে ওয়ার্ক পারমিট ভালো করে পড়তে দেখতে হবে।
৮। ভিসার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন জমা দিতে বললে দূতাবাস নির্ধারিত ক্লিনিক থেকেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন সংগ্রহ করতে হবে।
৯। ভিসা পাবার পর সেটি ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। মনে রাখতে হবে, শ্রমিক ভিসা ছাড়া অন্য ভিসায় কাজ করা অবৈধ। তাই নির্দিষ্ট দেশে ভিসার প্রকার ও কাজের ভিসার ব্যাপারে জানতে হবে।
১০। নির্দিষ্ট দেশে ও শিল্পে কাজের সুযোগ পেতে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
১১। যে দেশে যেতে ইচ্ছুক সে দেশের ভাষা রপ্ত করার চেষ্টা করতে হবে।
কী করবেন না?
১। অবৈধ বা নিবন্ধনহীন এজেন্সির মাধ্যমে লেনদেন বা চুক্তি করা যাবে না।
২। দালালের মাধ্যমে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে বা ভুল তথ্য দিয়ে যাবার চেষ্টা করা যাবে না।
৩। তাড়াতাড়ি কাজ হওয়ার লোভে সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত টাকা দেওয়া যাবে না।
৪। সস্তা বা পরিচিত ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যাবে না। উল্লেখ্য যে, দূতাবাস অনুমোদিত নির্দিষ্ট ক্লিনিক ছাড়া স্বাস্থ্য প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য হয় না।
৫। না জেনে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে পাসপোর্ট অফিসে দালালের মাধ্যমে পাসপোর্টের জন্য কাজ করা যাবে না।
৬। অনেক দেশে এখন শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। তাই না জেনে সেসব দেশে কাজের জন্যে যাবেন না।
৭। নদীপথে ট্রলারে বা জাহাজের গোপন পথে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা যাবে না।
৮। শ্রমিক ভিসা ছাড়া অন্য ভিসায় যাবেন না।
৯। নিজের পাসপোর্ট ছাড়া বা সঠিক ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া বিদেশে যাওয়া যাবে না।
পরিশেষে, সতর্কতার সঙ্গে উল্লিখিত ধাপ গুলো অনুসরণ করলে কোন ধারণের ঝামেলা ছাড়াই বিদেশে কাজ করার সুযোগ পাবেন।