আনসার হতে যেসব যোগ্যতা থাকা চাই
বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্যারা মিলিটারি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। শারীরিক যোগ্যতা সম্পন্ন যে কেউ এ বাহিনীতে কাজের সুযোগ পেয়ে থাকেন। সঙ্গে সরকারি বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তো রয়েছেই। তবে অনেকেই নিয়োগ প্রক্রিয়া ও আবেদনের নিয়ম নীতি না জানার কারণে এখানে কাজের সুযোগ পান না। এসব নিয়েই আজকের আয়োজন-
বিজ্ঞাপন
যেসব যোগ্যতা থাকতে হবে
আনসার ভিডিপিতে সাধারণত ‘সাধারণ আনসার’ পদে বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়। এ পদে নারী ও পুরুষ উভয় আবেদন করতে পারেন। এতে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি থাকতে হবে শারীরিক যোগ্যতাও-
১। বেশিরভাগ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেই শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয় অষ্টম শ্রেণি পাস। তবে এসএসসি পাস করলেও আবেদন করা যাবে।
২। শারীরিক উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং বুকের মাপ ৩০ ইঞ্চি বাই ৩২ ইঞ্চি থাকতে হবে।
৩। দৃষ্টিশক্তি থাকতে হবে ৬ বাই ৬।
৪। তবে আনসার ভিডিপিতে অধিক দেওয়া হয় উচ্চতা সম্পন্ন, শহীদ পরিবারের সদস্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি জানা লোক এবং আনসার-ভিডিপির মৌলিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের।
৫। বয়সসীমা ১৮-৩০ হলেই আবেদন করা যাবে।
আবেদন করবেন যেভাবে
এখন ঘরে বসেই আবেদন করা সম্ভব। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রিক্রুটমেন্ট সাইটে প্রবেশ করেই নির্দিষ্ট পদে আবেদন করা যাবে। এমনকি সাইটে উল্লেখিত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আবেদন ফি প্রদান করা যাবে। আবেদন ফি প্রদানের পর অনলাইনে একটি প্রবেশপত্র দেওয়া হবে। এটি প্রিন্ট করে নিয়োগ পরীক্ষার সময় উপস্থাপন করতে হবে।
যেসব কাগজপত্র থাকতে হবে
১। বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সময় শিক্ষাগত যোগ্যতা, নাগরিকত্ব সনদ, চারিত্রিক সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, প্রবেশপত্রের এক কপি সত্যায়িত ফটোকপিসহ মূল সনদ সঙ্গে নিতে হবে।
২। পাসপোর্ট সাইজের চার কপি সত্যায়িত রঙিন ছবি।
৩। সঙ্গে রাখতে হবে কলম, পেনসিল ও ক্লিপ বোর্ড।
কীভাবে নেওয়া হয় বাছাই পরীক্ষা
নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয় তিন ধাপে। থাকে প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। প্রাথমিক বাছাইয়ে শারীরিক গঠন, বয়স, উচ্চতা, দৃষ্টিশক্তি, বুকের মাপ পরীক্ষা করে দেখা হবে। দৌড়, লং জাম্পের আয়োজন করা হয়। দেখা হয় হাঁটা বা দৌড় দেওয়ার সময় দুই হাঁটু লেগে যায় কি না।
লিখিত পরীক্ষায় সাধারণত পঞ্চম-অষ্টম শ্রেণির পাঠ্য বই থেকে বেশি প্রশ্ন আসে। বাংলা, ইংরেজি, গণিতের পাঠ্য বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো চর্চা করতে হবে। সাধারণ জ্ঞানের জন্য বিগত দুই বছরের আলোচিত বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। লিখিত পরীক্ষার পরপরই ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় আনসার-ভিডিপির কার্যক্রম ও পদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশ্ন করা হতে পারে।
এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় জেলা ভিত্তিক আনসার ভিডিপি জোন অফিসে। তবে চূড়ান্ত নিয়োগ প্রক্রিয়াটি প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমোদনের পরপরই হয়ে থাকে।
আয় রোজগার কেমন?
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বেতন-ভাতার নিয়ম অনুসারে মাসিক ১৩ হাজার ৫০ টাকা ভাতা পাওয়া যাবে সমতলের জন্য। পার্বত্য এলাকায় কাজের জন্য ভাতা পাওয়া যাবে মাসিক ১৪ হাজার ২০০ টাকা।
এছাড়াও বছরে দুটি উৎসব ভাতা ৯ হাজার ৭৫০ টাকা ও ভর্তুকি মূল্যে রেশন সুবিধা দেওয়া হবে। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে পাঁচ লাখ টাকা এবং স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ববরণ করলে দুই লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।