সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাকরির নিয়োগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরমধ্যে সিংহভাগই হয় লিংকডইনে। ফলে নিয়োগকর্তা থেকে চাকরি প্রার্থী; উভয় পক্ষের কাছেই লিংকডইন কার্যকরি একটি মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। 

যদিও লিংকডইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে অনুসরণ করতে হবে বেশকিছু কৌশল। অনেকে এ সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত নন। লিংকডইনে কী করলে কী হয়, সেসব নিয়েই আজকের আলোচনা- 

লিংকডইনের টুকিটাকি

গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে লিংকডইন সার্চ করে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এপর সাইনআপের গিয়ে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।অ্যাকাউন্ট খুললেই হবে না। করতে নিজের ব্র্যান্ডিং। 

প্রথমেই আইডিতে সুন্দর একটি  শিরোনাম অর্ন্তরভুক্ত করতে হবে। যাতে চাকরিদাতারা আইডির হেডলাইন দেখে আপনাকে বিবেচনা করবেন। লিংকডইনে শিরোনাম বলতে ১২০ অক্ষরের মধ্যে যা লিখতে হয় তাকেই বোঝায়। হেডলাইন অবশ্যই পেশাদারী হতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে মিল রেখে হেডলাইন লিখতে হবে। 

সামারি অর্ন্তভূক্ত করুন

সামারি হলো নিজের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। মূলত এখানে নিজের অভিজ্ঞতার ব্যাপারে লিখা হয়। আপনার অভিজ্ঞতার ব্যাপারে ইনফোগ্রাফিক্স বা ছবি ব্যবহার করলে চাকরিদাতা সহজেই সেদিকে খেয়াল করবেন। খুব কম সময়ের মধ্যে চাকরিদাতারা আকৃষ্ট হয়, সামারিতে এমন কিছু লেখা উচিত। 

অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিন

চাকরির বাজারে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো অভিজ্ঞতা। কোনো প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। সাধারণত যেভাবে সিভি বা জীবনবৃত্তান্ত লেখা হয়ে থাকে, ঠিক সেভাবেই একটু সাজিয়ে গুছিয়ে অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিলেই চাকরিদাতার আপনার প্রতি আকৃষ্ট হবেন। অভিজ্ঞতার কাজের বর্ণনা, অনলাইন সার্টিফিকেট ও কাজের সময়সীমা তুলে ধরলে আরও ভালো হয়। এসইও’র জন্য এমন কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে যাতে সার্চ করলেই আপনার লিংকডইন প্রোফাইল সামনে পাওয়া যায়। প্রতিটা সেকশনে কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করলে ভালো হয়। 

প্রোফাইল সম্পূর্ণ করুন

যখন লিংকডইন অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে যাবেন, তখন লিংকডইন থেকে সম্পূর্ণ প্রোফাইল তৈরির জন্য বলা হবে। লিংকডইন কর্তৃপক্ষের মতে, সম্পূর্ণ প্রোফাইল সার্চে উপরের দিকে উঠে আসার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। এই কারণে নিজের লিংকডইন প্রোফাইল সম্পূর্ণ না করলে তা প্রফেশনাল হিসেবে বিবেচিত হবে না। 

লিংকডইন প্রোফাইল শতভাগ কার্যকরী করবেন যেভাবে-

১. নিজের ছবি আপলোড করুন

২. কাজের তথ্য ও নিজের ঠিকানা সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করা

৩. অন্তত দুই প্রতিষ্ঠানে কাজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করা

৪. সঠিকভাবে শিক্ষাগত যোগ্যতা তুলে ধরা

৫. কমপক্ষে তিনটি কাজের দক্ষতা তুলে ধরা

৬. কমপক্ষে ৫০টি কানেকশন। 

চাকরিদাতাদের আকৃষ্ট করার উপায়

অলস্টার লিংকডইন প্রোফাইল তৈরির মাধ্যমে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহজেই নিজের ব্র্যান্ডিং করা সম্ভব। প্রোফাইল অলস্টার লিঙ্কডইন হিসেবে দেখতে নিচের কয়েকটি কাজ করতে হবে- 

১২০ শব্দের হেডলাইন লিখুন: কর্মক্ষেত্র ও অবস্থান সম্পর্কে ১২০ শব্দের মধ্যে হেডলাইন লিখুন। সঠিক শব্দ বা কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করে নিজের ব্র্যান্ডিং এমনভাবে করতে হবে যেন তা এইচআরের কাছে আকর্ষণীয় হয়। কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার বর্ণনা করুন। 

প্রোফাইল লিংক কাস্টমাইজেশন : লিংকডইন প্রোফাইল সবার কাছে সহজ করে উপস্থাপনের জন্য ইউআরএল কাস্টমাইজ করতে হবে। প্রোফাইল লিংক কাস্টমাইজেশনের মাধ্যমে চাকরিদাতারা সহজেই আপনাকে লিংকডইনে শনাক্ত করতে সমর্থ হবেন। 

এসইও কী-ওয়ার্ড: নিজের যোগ্যতা বিভিন্ন উপায়ে দেখিয়ে অন্য প্রার্থীদের তুলনায় বেশি পারদর্শী প্রমাণ করা চাকরিপ্রার্থীর একমাত্র লক্ষ্য এসইও কী-ওয়ার্ড। একে হ্যাশট্যাগ লিংকডইন এসইও বলা হয়। চাকরিদাতারা অনেক সময় যোগ্য প্রার্থীর নাম সার্চ করে বের করেন আবার কখনো লিংকডইন গ্রুপের মাধ্যমে বের করেন। গুগলে যেমন পেইজ র‌্যাংকিংয়ের জন্য এসইও করা হয়, তেমনই লিংকডইনে প্রোফাইল র‌্যাংক করার জন্য এসইও করা হয়। লিংকডইনে এসইও করলে অন্য প্রার্থীর তুলনায় আপনার যোগ্যতা বেশি রয়েছে বলে ধরা হবে। 

হ্যাশট্যাগের যথাযথ ব্যবহার : ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামের হ্যাশট্যাগের মতো লিংকডইনেও হ্যাশট্যাগ রয়েছে। লিংকডইনে বিভিন্ন চিহ্ন, সংখ্যা বা ইমোজির মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়। আপনার হ্যাশট্যাগ চাকরিদাতাদের ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করবে। 

চিন্তাভাবনা করে মন্তব্য করুন : স্মার্ট কমেন্ট আপনাকে লিংকডইনে লক্ষণীয় করে তোলে। সবসময় চিন্তাশীল মন্তব্য করুন। অন্য মন্তব্যকারীদের ট্যাগ হিসেবে ‘@’ ব্যবহার ভালোভাবে কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়ার মোক্ষম উপায়। মন্তব্য করার সময় আপনার নির্দিষ্ট ক্ষেত্র ও জানাশোনা রয়েছে এমন বিষয় পোস্ট হিসেবে বেছে নিন।