গত কয়েক দশকের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় ইউনিসের তাণ্ডবে ইউরোপজুড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১৬ জনে। ঝড়ের কারণে ইউরোপের লাখ লাখ বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে এবং পরিবহন ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলতা দেখা দিয়েছে। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

গত শুক্রবার শক্তিশালী এই ঝড় যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপর অন্যান্য দেশে আঘাত হানে। শনিবার প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ৯ জন বলে জানানো হলেও রোববার তা ১৬ বলে নিশ্চিত করা হয়। ব্রিটেন ছাড়াও বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, পোল্যান্ড এবং আইরিশ রিপাবলিকে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

মূলত শক্তিশালী বাতাসের কারণে গাছ উপড়ে পড়ে এবং ধ্বংসাবশেষ উড়ে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঝড়ের আঘাতে বিপর্যস্ত এসব দেশের  লাখ লাখ বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে এবং পরিবহন নেটওয়ার্ক বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে।

ডাচ কোস্টগার্ড জানিয়েছে, শক্তিশালী এই ঝড়ের কারণে উত্তর সাগরে তাদের ২৬টি খালি শিপিং কন্টেইনার হারিয়ে গেছে এবং তারা সেগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। হারিয়ে যাওয়া এসব কন্টেইনার খুঁজতে হেলিকপ্টার এবং জরুরি টোয়িং জাহাজ ব্যবহারের কথাও জানিয়েছে তারা।

ঝড়ের সময় বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ মাইলেরও (প্রায় ২০০ কিলোমিটার) বেশি। বিবিসি বলছে, ঝড় ইউনিসের তাণ্ডবে নেদারল্যান্ডসে চারজন নিহত হয়েছেন। মূলত ঝড়ো বাতাসের কারণে গাড় পড়ে তারা নিহত হন। এছাড়া পোল্যান্ডে নিহত হয়েছেন আরও চারজন।

এদিকে ইংল্যান্ডের একটি সড়কেই নিহত হয়েছেন তিনজন। এছাড়া জার্মানিতে দুইজন এবং বেলজিয়ামে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যাও দুই। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের ওয়েক্সফোর্ড কাউন্টিতে ৬০ বছরের বেশি বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছের আঘাতে তিনি প্রাণ হারান।

এছাড়া ঝড় সম্পর্কিত নানা সড়ক দুর্ঘটনায় ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। এর পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসের একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের ছাদের কিছু অংশ উড়ে গেছে।

ইউনিসের কারণে বেলজিয়াম, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যে উচ্চগতির ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়। অন্যদিকে জার্মানির একটি রেল অপারেটর জানিয়েছে, ঝড়ের কারণে ১ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি রেলওয়ে ট্র্যাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টিএম