আকাশে উড়তে থাকা অবস্থায় সড়কের ওপর আছড়ে পড়ল কয়েকশ পাখির একটি দল। দলের সব পাখির গায়ের র‌ং কালো, বুক ও মাথার পালক হলুদ রংয়ের।

কংক্রিটের সড়কে আছড়ে পড়ার পর ওই দলটি অনেক পাখি ফের উঠে আকাশে উড়ে গেলেও মৃত্যু হয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পাখির। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮ টার দিকে মেক্সিকোর উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর চিহুয়াহুয়ায় অদ্ভুত এই ঘটনা ঘটার পরই স্থানীয় লোকজন থানায় ফোন করে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেন।

চিহুয়াহুয়ার যে এলাকায় ঘটেছে এই ঘটনা, সেখানের নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ওপর থেকে ভারি কোনো বস্তুর ধপাস পতনের মতোই কংক্রিটের সড়কে আছড়ে পড়ে কয়েক হাজার পাখির এই দলটি। তার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দলের অনেক পাখি ফের উড়ে যেতে সক্ষম হলেও সড়কে পড়েছিল বেশকিছুসংখ্যক মৃত পাখি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এই চিত্রটি দেখেছেন ১৪ লাখেরও বেশি মানুষ। এছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে এই ভিডিওটি।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞরা পাখিদের এই অভূতপূর্ব আচরণের কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি। যুক্তরাষ্ট্রের পশু-পাখি বিষয়ক অনেক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, শীতের সময় ঘর গরম রাখতে ব্যবহৃত হিটারের ধোঁয়া কোনোভাবে এই পাখিদের জন্য বিষাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছিল। এ কারণে বাড়িঘরের ওপর দিয়ে যখন এই পাখির দলটি উড়ে যাচ্ছিল, সে সময় সেই ধোঁয়াপূর্ণ বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে গিয়ে বিষের প্রভাবে তারা সড়কে আছড়ে পরে এবং দলের মধ্যে যেসব পাখির শারীরিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো, তারা উড়ে যেতে সক্ষম হয়— বাকিরা মারা যায়।

আবার অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, বাড়িঘরের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুতায়িত তারের সংস্পর্শে আসায় উড়ন্ত অবস্থায় সড়কে আছড়ে পড়ে পাখিরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনেক নেটিজেনের সন্দেহ— মোবাইলের ফাইভ জি তরঙ্গ পাখিগুলো সহ্য করতে না পারায় এই ঘটনা ঘটেছে।

তবে এসবের বাইরে ভিন্ন একটি সম্ভাব্য কারণ নির্দেশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রকৃতি ও বাস্তুসংস্থান বিশেষজ্ঞ ড. রিচার্ড ব্রোটন। দেশটির জাতীয় দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, ওই সময় এই দলটিকে বাজ বা অন্য কোনো শিকারি পাখি তাড়া করছিল এবং এই সংখ্যা একের অধিক ছিল।’

‘শিকারি পাখির তাড়ায় এই দলটি ভয় পাওয়া ও তার ফলে দ্বিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ওড়ার কারণেই ঘটেছে এই দুঃখজনক ঘটনা।’

এসএমডব্লিউ