হাসপাতালের বেডে ঘুমাচ্ছে কুকুর, তাও আবার সরকারি হাসপাতালে! সম্প্রতি এমনই দৃশ্যের দেখা মিলেছে ভারতের বিহার রাজ্যের একটি সরকারি হাসপাতালে। কুকুর ঘুমানোর ঘটনার এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এরপরই শোরগোল পড়ে যায়।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। এই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই বিহারের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিহারের একটি হাসপাতালে পাশাপাশি থাকা অনেকগুলো বেডে বসে ও শুয়ে রয়েছেন রোগীরা। কেউ আবার ঘুমাচ্ছেন। তার ঠিক পাশে একটি বেডে ঘুমাচ্ছে তিনটি কুকুর! আরও একটি কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে সেখানে।

কিন্তু অদ্ভুতভাবে সেখানে হাসপাতালের কোনো কর্মীকে দেখা যায়নি। এছাড়া ওই ঘরে যে রোগীরা ছিলেন, তাদের মধ্যে কাউকেও দেখা যায়নি কুকুরগুলোতে তাড়ানোর চেষ্টা করতে। এই ভিডিও স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল ফেলে দেয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোগীর বেডে কুকুর ঘুমানোর এই ভিডিওটি বিহারের সিওয়ান সদর হাসপাতালের জেনারেল ওয়ার্ডের। এর আগে এই একই হাসপাতালের আর একটি ঘটনা ভাইরাল হয়েছিল, সেসময় একটি কুকুরকে রোগীর খাবার খেতে দেখা গিয়েছিল।

এই ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে ডা. ওয়াই কে শর্মা বলেন, ‘হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডের একটি দরজা ভাঙা। সেখান থেকেই কুকুর ঢুকে পড়েছিল। বিষয়টি জানার পর সেখানে প্লাস্টার করা হয়েছে। হাসপাতালটি অনেক পুরনো। পরবর্তীতে আর সমস্যা হবে না বলেই আশা করছি।’

তার ভাষায়, ‘হাসপাতালের এই জেনারেল ওয়ার্ডটি পুরনো বিল্ডিংয়ে। এই বিল্ডিংটির অবস্থা খুব খারাপ! যেখানে-সেখানে ভেঙে পড়েছে। এই ভবনটি ভেঙে নতুন মডেলে ভবন তৈরি হবে খুব তাড়াতাড়ি। এই ঘটনার পর ওয়ার্ডের দরজার ভাঙা অংশ ইট দিয়ে মেরামত করা হয়েছে।’

এর পাশাপাশি দায়িত্বপালনের অবহেলার অভিযোগে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্মীদের শো-কজ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডা. ওয়াই কে শর্মা।

উল্লেখ্য, বিহারের ওই হাসপাতালে এই ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে গতবছর গাফিলতির আরেকটি ছবি ধরা পড়েছিল বিহারের সরকারি হাসপাতালের! রোগী বেঁচে থাকলেও তার পরিবারের হাতে অন্য একজনের মৃতদেহ তুলে দিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাদা কাপড়ে মোড়া মরদেহ নিয়ে তারা রওনাও দিয়েছিলেন শেষকৃত্যের জন্য।

সেসময় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে পাটনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন চুন্নু কুমার নামে এক রোগী। চল্লিশের ঘরে বয়সী চুন্নুর পরিবারকে জানানো হয় করোনায় তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহও তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। কিন্তু পরে দেখা যায় বেঁচে আছেন চুন্নু, শুয়ে আছেন হাসপাতালেরই বেডেই।

করোনায় মারা যাওয়ার কারণে মরদেহের কাছাকাছি যেতে পারেননি আত্মীয়রা। কাপড়ে মোড়া অবস্থাতেই মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শেষকৃত্যের জন্য। শেষকৃত্যের আগে এক আত্মীয় শেষবারের জন্য মৃত ব্যক্তির মুখ দেখতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে! বুঝতে পারেন, অন্য কারও মৃতদেহ নিয়ে শেষকৃত্যে এসেছেন তারা। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, চুন্নু তো বেঁচে আছেন।

টিএম