অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে তথা ঝামেলাহীন ভ্রমণের জন্য অনেকে আকাশপথে চলাচলকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। কিন্তু আকাশপথে ভ্রমণও সবসময় সুখকর বা ঝামেলাহীন নাও হতে পারে। তার সর্বশেষ উদাহরণ হয়তো এয়ার এশিয়ার একটি ফ্লাইট। মাঝ আকাশে থাকা অবস্থায় ওই ফ্লাইটটিতে সাপের উপস্থিতি টের পেয়ে বেঁধে যায় হুলস্থুল কাণ্ড।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার এশিয়ার ফ্লাইট একে৫৭৪৮ সাবাহ প্রদেশের তাওয়াউ শহরের উদ্দেশে যাচ্ছিল। সেই বিমানের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটেছে।

ফ্লাইটের আসনের ওপর দিকে যেখানে ব্যাগ রাখা হয় সেখানেই দেখা যায় একটি সাপকে ঘুরে বেড়াতে। সেটিও আবার ফ্লাইটটি যখন অবস্থান করছে মাঝ আকাশে। এদিকে ফ্লাইটের মধ্যে সাপ দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যাত্রীদের মধ্যে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার কথা স্বীকার করেছে এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষও।

সংবাদমাধ্যম বলছে, গত বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিকেল ৫টা ৪১ মিনিটে সাবাহ প্রদেশের তাওয়াউ শহরের উদ্দেশে যাত্রা করে এয়ার এশিয়ার ওই ফ্লাইটটি। যাত্রার পর ফ্লাইটটি মাঝ আকাশে থাকার একপর্যায়ে পর প্রথমে একজন টিকটক ব্যবহারকারী ওই সাপটিকে দেখতে পান। এরপরই সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করে রাখেন ওই ব্যক্তি। পরে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

ভাইরাল ওই ভিডিওটি এখন পর্যন্ত ২০ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফ্লাইটের হ্যান্ড লাগেজ রাখার কম্পার্টমেন্টের এক পাশ থেকে অন্য পাশে ধীরে ধীরে যাচ্ছে সাপটি। এদিকে মাঝ আকাশে বিমানের মধ্যে সাপ দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যাত্রীদের মধ্যে।

সাপের উপস্থিতির কথা সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয় ফ্লাইটের ক্যাপ্টেনকে। এরপর বিমানটিকে পরিষ্কার করতে গন্তব্যের প্রায় এক হাজার ৫০০ কিলোমিটার আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কুচিংয়ে ঘুরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পাইলট। পরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে কুচিংয়ে বিমানটিকে অবতরণ করানো হয়।

অবশ্য আকাশ ভ্রমণ করে আসা সাপটি কোন প্রজাতির তা এখনও জানা যায়নি। এছাড়া সাপটি ফ্লাইটের ভেতরে কিভাবে ঢুকলো সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। অবশ্য সাপটিকে কোনো যাত্রী নিয়ে উঠেছিলেন কি না সেটিও এখনও স্পষ্ট নয়। পরে কুচিংয়ে অবতরণের পর ফ্লাইট থেকে সাপটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর নিয়ম মেনে ফ্লাইটটিকে সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করে যাত্রীদের নিয়ে ফের যাত্রা শুরু করা হয়।

এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাপটির কারণে কোনো যাত্রীর ক্ষতি হয়নি। বিষয়টি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে কুচিংয়ে বিমানটিকে অবতরণ করান ক্যাপ্টেন। সাধারণত ভ্রমণ শুরুর আগে ফ্লাইটে নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি চালানো হয়ে থাকে।

কিন্তু, এয়ার এশিয়ার এই বিমানটি কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাবাহের উদ্দেশে উড্ডয়ন করার আগে সাপটি কারও নজরে এলো না কেন, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।

টিএম