ছবি: রয়টার্স

পাশ্চাত্য দেশগুলোর সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনকে (ন্যাটো) ঘিরে ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই নতুন করে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে রাশিয়া। তবে এবার সীমান্তে নয়, ইউক্রেনের সংলগ্ন দ্বীপ ক্রিমিয়া ও দেশটির নিকটবর্তী কয়েকটি এলাকা ও মিত্রদেশ বেলারুশে সেনা উপস্থিতি বাড়াচ্ছে দেশটি।

মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি ম্যাক্সার টেকনোলজিস শুক্র ক্রিমিয়া ও তার আশপাশের এলাকার কিছু স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করেছে। সেসব চিত্র বিশ্লেষণ করে জানা গেছে— ক্রিমিয়া, দেশের পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা ও বেলারুশে সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে ম্যাক্সার টেকনোলজির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার এসব ছবি তোলা হয়েছে। সেসব ছবিতে ক্রিমিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর সিম্ফেরোপোলের অক্টায়াব্রেসকোয়ে বিমানঘঁটিতে অন্তত ৫৫০ টি সেনা ছাউনি ও কয়েকশ সামরিক যানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যা আগে ছিল না।

আরও পড়ুন :  মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ

এছাড়া, নতুন করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে ক্রিমিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল নভুজেরানয়ের স্ল্যাভনে শহরেও।

তবে এসব তথ্যের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।

২০১৪ সালে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তায় ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া ছিনিয়ে নিয়েছিল রাশিয়া। কৃষ্ণসাগরের এই দ্বীপটির ওপর নিজেদের দখল নিরাপদ রাখতেই সেখানে সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে বলে মনে করছেন পাশ্চাত্যের আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

ক্রিমিয়া ছাড়াও রাশিয়ার অন্যতম মিত্র দেশ বেলারুশ ও দেশটির পশ্চিাঞ্চলের সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ক্রুস্ক ট্রেইনিং এরিয়াতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রুশ সেনা ও সামরিক যানের উপস্থিতি দেখা গেছে বলে জানাচ্ছে ম্যাক্সারের স্যাটেলাইট চিত্র। বর্তমানে বেলারুশের সঙ্গে ১০ দিনের সামরিক মহড়া করছে রাশিয়া।

আরও পড়ুন : সমুদ্র অবরোধ করেছে রাশিয়া, অভিযোগ ইউক্রেনের

রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ক্রুস্ক ট্রেইনিং এরিয়ার অবস্থান ১১০ কিলোমিটার পূর্বে। গত প্রায় ২ মাস ধরে ওই সীমান্তে প্রায় ১ লাখ রুশ সেনা অবস্থান করছে।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।

১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।

একসময়ের সোভিয়েত অঙ্গরাষ্ট্র ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রুশ বংশোদ্ভুত। দেশটিতে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীও বেশ সক্রিয়।

এসএমডব্লিউ