রাশিয়ার একটি আর্ট গ্যালারিতে থাকা সোভিয়েত আমলের বিমূর্ত, মানুষের মুখমণ্ডলের অবয়বের চোখহীন একটি চিত্রকর্মে চোখ এঁকে দিয়েছেন এক প্রহরী। চাকরির প্রথম দিনেই এ কাজ করেন তিনি।   

আনা লেপোস্কায়ার আঁকা ‘থ্রি ফিগার্স’ চিত্রকর্মটি রাখা ছিল রাশিয়ার ইয়েলস্তিন সেন্টারে। ডিসেম্বরে ওই গ্যালারিতে গিয়ে দু’জন প্রথম লক্ষ্য করেন যে এতে বল পয়েন্ট দিয়ে চোখ আঁকা হয়েছে। 

এরপর ঘটনা জানাজানি হলে ওই প্রহরীকে বরখাস্ত করা হয়েছে ও তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।   

ইয়েলস্তিন সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন ওই প্রহরী।  

এক্সিবিশন কিউরেটর অ্যানা রেশেতকিনা রুশ ওয়েবসাইট ইউআরএ.আরইউকে বলেছেন, চাকরির প্রথম দিনেই কাজটা করেছেন ওই প্রহরী। তার উদ্দেশ্য এখনও পরিষ্কার না, তবে ধারণা করা হচ্ছে বুঝতে না পেরে কাজটা করেছেন তিনি।  

তিনি আরও বলেন, ইয়েলস্তিন সেন্টারের নিজস্ব ব্র্যান্ডের একটি কলম দিয়েই চিত্রকর্মটির ওপর চোখ এঁকে দিয়েছেন তিনি। 

তবে সৌভাগ্যবশত পেন দিয়ে খুব বেশি একটা চাপ দেননি তিনি, যার কারণে ক্ষতি কম হয়েছে বলে জানিয়েছে আর্ট নিউজপেপার রাশিয়া; খবরটি যারা প্রথম প্রকাশ করে। 

বিষয়টি প্রথম পুলিশকে জানানো হয়ে ২০ ডিসেম্বর। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে শুরুতে কোনো তদন্ত করতে চায়নি, কারণ তারা মনে করছিল খুব একটা বেশি ক্ষতি হয়নি। 

কিন্তু সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ নিয়ে আপত্তি তোলে। তারপর ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। 

এখন ওই প্রহরী দোষী প্রমাণিত হলে তার জরিমানা এবং সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। 

ঘটনাটি জানাজানি হওযার পরদিনই ছবিটি মস্কোর স্টেট ত্রেতইয়াকোভ গ্যালারিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে এটা ঠিকঠাক করার চেষ্টা করা হবে। আর এর জন্য প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মার্কিন ডলার খরচ হবে।  

এদিকে পরবর্তীতে একই ধরনের কোনো ঘটনা এড়াতে ইয়েলস্তিন সেন্টারের বাকি ছবিগুলোতে প্রটেকটিভ স্ক্রিন লাগানো হয়েছে। 

লেপোস্কায়া তার আঁকা চিত্রকর্ম ও বিভিন্ন ভবনের নকশার জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন। রাশিয়ার বিভিন্ন জাদুঘরে তার চিত্রকর্ম রয়েছে। 

রাশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট বোরিস ইয়েলস্তিনের নামানুসারে ইয়েলস্তিন সেন্টারের নামকরণ। ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন বোরিস ইয়েলস্তিন। 

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর অথনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট সামাল দিতে হয়েছিল তাকে। যতদিনে তিনি ক্ষমতা ছাড়েন তার জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ধস নামে। তার নামে জাদুঘরের নামকরণ নিয়ে মানুষের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। 

সূত্র : বিবিসি। 

এনএফ