ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলনের ঢেউ দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আছড়ে পড়েছে। বুধবার কলকাতায় শত শত মুসলিম শিক্ষার্থী রাস্তা অবরোধ করে হিজাবের পক্ষে বিভ্ন্নে ধরনের স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।

কর্ণাটকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিবাদ করছেন শত শত মুসলিম ছাত্রী। ১৫ বছর বয়সে ২০১২ সালে নারী শিক্ষার অধিকারের পক্ষে কথা বলার জন্য পাকিস্তানে তালেবানের হামলায় বেঁচে যাওয়া মালালা ইউসুফজাই মঙ্গলবার মুসলিম নারীদের প্রান্তিককরণ বন্ধে ব্যবস্থা নিতে ভারতীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, গত সপ্তাহে কর্ণাটকের কয়েকটি স্কুল মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরে ঢোকার অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এই ঘটনার পর রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা প্রতিবাদে নামেন।

এর পাল্টা হিসেবে কর্ণাটকের হিন্দু শিক্ষার্থীরা হিজাব নিষিদ্ধের দাবিতে পাল্টা প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করে। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে সহিংস হয়ে ওঠায় রাজ্য সরকার সব স্কুল, কলেজ তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। 

বুধবার কলকাতায় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন হিজাব পরা নারী বলে রয়টার্সকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন। কোনও ধরনের সহিংসতা ছাড়াই এই বিক্ষোভ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, তারা বৃহস্পতিবার আবারও সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছেন।

কলকাতায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তাসমিন সুলতানা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সরকার মুসলিম শিক্ষার্থীদের অপমান বন্ধ না করা পর্যন্ত আমরা প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবো। আমরা আমাদের মৌলিক অধিকার ফিরে চাই... আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারেন না। 

দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতেও বুধবার বিক্ষোভ করেছেন মুসলিম শিক্ষার্থীরা।

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ক্ষমতায় আছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এই রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ১২ শতাংশই মুসলিম। আগামী নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদীদের উসকে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস