ছবি: আলজাজিরা

সার্স-কোভ-২ বা মূল করোনাভাইরাস এবং এটির অন্যান্য রূপান্তরিত ধরনগুলো তরুণ ও সুস্থ-স্বাস্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রাণঘাতী নয়। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।

যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, দেশটির টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনাকারী সরকারি টাস্কফোর্স ও চিকিৎসা সামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এইচভিআইভিও’র সহযোগিতায় গত এক বছর ধরে লন্ডনে এ বিষয়ক একটি গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করেছে আন্তর্জাতিক কোম্পানি ওপেন অরফান। সেই গবেষণাতেই এ তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছিল হিউম্যান চ্যালেঞ্জ স্টাডি, এবং যে পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গবেষণাটি করা হয়েছে তার নাম ‘প্লাগ অ্যান্ড প্লে’। ৩৬ জন সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান তরুণ-তরুণী স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এতে অংশ নেন। তাদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে।

স্বেচ্ছাসেবকদের সবার দেহে সার্স-কোভ-২ বা মূল করোনাভাইরাস প্রবেশ করানো হয় ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে। তারপর এক বছর তাদের নিয়ন্ত্রিত কোয়ারেন্টাইন পরিবেশে রাখা হয়। এই সময়ে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের শারীরিক অবস্থা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন গবেষকরা।

২ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে কোম্পানি কতৃপক্ষ বলেছে, এই এক বছরে স্বেচ্ছাসেবদের দেহে করোনার উপসর্গের উপস্থিতি দেখা গেলেও তা কখনও গুরুতর পর্যায়ে যায়নি। পাশাপাশি, তাদের সবাই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর টিকা কিংবা করোনার ওষুধ ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

বিবৃতিতে কোম্পানির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘স্বেচ্ছাসেবকদের নিরাপত্তাকে গবেষণায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।

তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।

মহামারি শুরুর পর থেকে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের পরিসংখ্যান বলছে, গত দুই বছরের মহামারিতে বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩৮ কোটি ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৪০ জন এবং এই রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৫৭ লাখ ৭ হাজার ৫৫৬ জনের।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ