বিশ্বের অনেকে দেশই পাঁচ বছর ও এর বেশি বয়সী শিশুদের করোনা টিকার আওতায় এনেছে (প্রতীকী ছবি)

করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে এবার ৫ বছরের কমবয়সী শিশুদের জন্য কোভিড-১৯ টিকার অনুমোদন দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েকমাস আগে ৫ বছর থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার অনুমোদন দিয়েছিল দেশটি।

অর্থাৎ করোনা টিকার বাইরে থাকা অতি অল্পবয়সী শিশুদেরও এবার টিকার আওতায় আনার কথা চিন্তা করছে দেশটি স্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিনির্ধারকরা। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রে ৫ বছরের কমবয়সী শিশুদের জন্য তাদের করোনা টিকার অনুমোদনের জন্য মঙ্গলবার আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করে ফাইজার-বায়োএনটেক। এরপরই বিষয়টি বিবেচনায় নেয় মার্কিন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ফাইজার এবং তাদের জার্মানভিত্তিক অংশীদার বায়োএনটেক মঙ্গলবার জানায়, ২ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের শরীরে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য ফাইজারের টিকার অনুমোদন চেয়ে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) জরুরি জনস্বাস্থ্যবিষয়ক প্রয়োজনীয়তা পূরণের তাগিদেই এই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।

অবশ্য গত ডিসেম্বরে ফাইজার জানিয়েছিল যে, তাদের করোনা টিকা কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের মতো ২ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের শরীরে প্রত্যাশা অনুযায়ী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারেনি। এফডিএ ও যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) চূড়ান্ত জরুরি অনুমোদন দিলে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ভ্যাকসিনটির ব্যবহার শুরু হতে পারে।

এফডিএ’র ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জ্যানেট উডকক জানিয়েছেন, ৫ বছরের কমবয়সী শিশুদের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর একটি করোনা টিকা পাওয়ার বিষয়টি আমাদের অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভাইরাসের অতিসংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাইজারকে আবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।

ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, ৫ বছরের কমবয়সী শিশুদের শরীরে প্রয়োগের জন্য টিকার অনুমোদন দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে বসবেন সংস্থার বাইরের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি। বৈঠকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে সিডিসি’র বিশেষজ্ঞরা আলোচনায় বসবেন এবং কিভাবে অল্পবয়সী শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে সেটি নির্ধারণ করবেন।

এর আগে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষে ৫ বছর থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড-১৯ টিকা দিতে সুপারিশ করে এফডিএ বিশেষজ্ঞরা। সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ প্যানেল সেসময় জানায়, শিশুদের ক্ষেত্রে ফাইজারের টিকা প্রয়োগে নানাবিধ ঝুঁকি ও পাশ্বপ্রতিক্রিয়ার তুলনায় উপকারিতা বেশি।

এরপরই সপ্তাহখানেকের মধ্যে ৫ বছর থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজারের করোনা টিকার অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে বর্তমানে ৫ বছর থেকে শুরু করে এর বেশি বয়সীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে।

টিএম