ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের সফরের মধ্যেই আমিরাতে মিসাইল হামলা
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবারের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফর করছেন আইজ্যাক হারজোগ। রাজনৈতিক ও অন্যান্য কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই সফরটিরই মধ্যেই দেশটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা।
তবে ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই সেটি ধ্বংস করে দেয় আমিরাতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। চলতি মাসে এটি নিয়ে তৃতীয়বার আমিরাতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা ঘটল। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
বিজ্ঞাপন
আরব আমিরাতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের নিক্ষেপ করা একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল ইউএই’র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শনাক্ত করার পরপরই ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে আরও বলা হয়, মিসাইলের ধ্বংসাবশেষ জনমানবহীন একটি এলাকায় পড়েছে এবং এতে কেউ হতাহত হয়নি।
আমিরাতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের একটি মিসাইল লঞ্চারও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তবে ইয়েমেনের ঠিক কোথায় সেই লঞ্চার ধ্বংস করা হয়েছে সেটি স্পষ্ট করা হয়নি।
সকল ধরনের হুমকি মোকাবিলায় আরব আমিরাত তৈরি এবং যেকোনো ধরনের হামলা থেকে ইউএই’কে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি হুথিদের চালানো প্রথম দফার সশস্ত্র ড্রোন হামলায় আবু ধাবিতে তিনটি তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুই ভারতীয় এবং এক পাকিস্তানির প্রাণহানি ঘটে। ওই বিস্ফোরণে আরও ৬ জন আহত এবং আবু ধাবি ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের একটি নির্মাণ স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
এরপর গত ২৪ জানুয়ারি আমিরাতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, উপসাগরীয় এই দেশটি লক্ষ্য করে দু’টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। তবে ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি লক্ষ্যে আঘাত হানার আগেই আকাশে আটকে দেওয়ার পর ধ্বংস করা হয়েছে। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ রাজধানী আবু ধাবির কাছের বিভিন্ন এলাকায় পড়েছিল। এ ধরনের হামলা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও সেসময় জানায় দেশটি। তবে এর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই আমিরাতের উদ্দেশে তৃতীয় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলো দেশটি।
এদিকে তৃতীয় দফায় হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন প্রথমবারের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ। ইরানের সঙ্গে বিশ্ব শক্তির দেশগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার বৈশ্বিক প্রচেষ্টা এবং এ নিয়ে আঞ্চলিক তীব্র উত্তেজনার মাঝে রোববার আমিরাত সফরে যান তিনি।
ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে আচমকা এবং এলোপাতাড়ি হামলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বোমা বোঝাই ড্রোন ব্যবহার করে আসছে। সৌদি আরবের বিমানবন্দর, তেল স্থাপনা এবং তেল-গ্যাসের পাইপলাইনে প্রায়ই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় এই বিদ্রোহীগোষ্ঠী।
অবশ্য ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে হতাহতের ঘটনার পর গত ১৮ জানুয়ারি মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল ইসরায়েল।
টিএম