মিয়ানমারের ‘গৃহযুদ্ধ’ নিরসনে বিশ্বকে তৎপর হওয়ার আহ্বান চীনের
মিয়ানমারে সহিংসতা ও গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি নিরসনে বিশ্বকে আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুন। জাতিসংঘের নবনিযুক্ত মিয়ানমার বিষয়ক দূত নোয়েলিন হেইজারকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ঝ্যাং জুন বলেন, ‘মিয়ানমারে বর্তমানে যে সহিংসতা ও গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে, তা থেকে দেশটির উত্তোরণ ঘটানোর জন্য অবশ্যই বিশ্বকে তৎপর হতে হবে। মিয়ানমারের বিষয়ে এটিই আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত। গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির অবসান না ঘটলে সেখানে চলমান সংকটের কোনো সুরাহা হবে না।’
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক দূত নোয়েলিন হেইজারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে যে পরিস্থিতি চলছে, তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে তার কিছুটা সময় লাগবে এবং আমি মনে করি, তাকে সেইটুকু সময় দেওয়া উচিত। ইতোমধ্যে তিনি মিয়ানমারের বিবদমান পক্ষদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন এবং আমরা আশা করছি, তিনি সাফল্যের সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।’
প্রায় এক বছর আগে, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিন অং হ্লেইং এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন।
অং সান সু চিকে সেইদিনই গ্রেফতার করে রাজধানী নেইপিদোর একটি কারাগারে বন্দি করা হয়। গ্রেফতার করা হয় মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণ অবশ্য অভুত্থানের পরের দিন থেকেই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন। শুরুর দিকে সেই বিক্ষোভ দমনে লাঠি, রবার বুলেট, জলকামান ব্যবহার করা হলেও এক পর্যায়ে জান্তা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবাহার করা শুরু করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
দেশটির মানবাধিকার সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মিয়ানমারে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে অন্তত দেড় হাজার মানুষের।
এদিকে, সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ এবং তা দমনে জান্তা কর্তৃপক্ষের দমন-পীড়ণ পরিস্থিতির মধ্যেই মিয়ানমারে সক্রিয় হয়ে ওঠে কারেন সহ একাধিক আঞ্চলিক সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। দেশটির গহীন অরণ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন করে জান্তাবিরোধী তরুণ বিক্ষোভকারীদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
সূত্র: এএফপি
এসএমডব্লিউ