ওমিক্রনের তাণ্ডবে দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণের রেকর্ড
চলমান করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দৈনিক সংক্রমণে নতুন রেকর্ড করেছে পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। মহামারি শুরুর পর থেকে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) প্রথমবারের মতো দেশটিতে একদিনে সাড়ে ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
ভাইরাসের অতিসংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুতগতিতে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ার কারণেই সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশটিতে কঠোর বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
দ্য কোরিয়া ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি (কেডিসিএ) জানিয়েছে, সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে আরও ৮ হাজার ৫৭১ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। মহামারির শুরুর পর থেকে দৈনিক সংক্রমণের বিচারে যা একটি রেকর্ড।
এর আগে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দেশটিতে একদিনে ৭ হাজার ৮৪৮ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মঙ্গলবারের আগে সেটিই ছিল একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ।
রয়টার্স বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ অনেকটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ভাইরাসের অতিসংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্টটি দেশটিতে সংক্রমণের মূল প্রভাবকে পরিণত হয়। যদিও গত সপ্তাহজুড়েই পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে করোনা পরীক্ষার পরিমাণ কম হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শুরু থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় দৈনিক সংক্রমণ ৪ হাজারের আশপাশেই ছিল। কিন্তু ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় গত সপ্তাহ থেকে সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আরও ছড়িয়ে পড়বে। সেসময় মোট সংক্রমণের ৯০ শতাংশেরও বেশি রোগী ওমিক্রনে আক্রান্ত হবেন এবং দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজারে এমনকি আরও বেশি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সোমবার একটি বিশেষ বিবৃতি জারি করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিম বো-কিউন। বিবৃতিতে ছুটির সময় তিনি সাধারণ মানুষকে ভ্রমণ ও এক জায়গায় সমবেত হওয়া থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন। আগামী শনিবার থেকে দেশটিতে ছুটি শুরুর কথা রয়েছে।
কেডিসিএ’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা মহামারির শুরু থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ ৩৪ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং সর্বমোট ৬ হাজার ৫৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
৫ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এই দেশটির প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৯৫ শতাংশই ইতোমধ্যে করোনা টিকার উভয় ডোজ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৮ শতাংশ মানুষ বুস্টার ডোজ নিয়েছেন।
টিএম