ইউক্রেনে রুশপন্থি নেতাকে ক্ষমতায় আনতে চায় মস্কো : যুক্তরাজ্য
ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ সামনে এনেছে যুক্তরাজ্য। দেশটির অভিযোগ, ইউক্রেনে রুশপন্থি নেতাকে ক্ষমতায় বসাতে কাজ করছে মস্কো। একইসঙ্গে হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের সাবেক কয়েকজন রাজনীতিকের সঙ্গে রাশিয়ার গোয়েন্দা কর্মকর্তারা যোগাযোগ করছে বলেও অভিযোগ করেছে দেশটি।
ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই শনিবার (২২ জানুয়ারি) মস্কোর বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য এই অভিযোগ সামনে আনে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। অবশ্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও এর সমর্থনে কোনো প্রমাণ সামনে আনেনি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের এমন অভিযোগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই বলে আসছে মস্কো।
শনিবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনে রুশপন্থি নেতৃত্বের সম্ভাব্য প্রধান হিসেবে দেশটির সাবেক আইনপ্রণেতা ইয়েভহেন মুরায়েভকে রাশিয়ার সরকার বিবেচনা করছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেনের ক্ষমতায় রুশপন্থি কোনো নেতাকে বসানোর ব্যাপারে ক্রেমলিনের ষড়যন্ত্র আমরা সহ্য করবো না। ক্রেমলিন জানে যে, ইউক্রেনে সামরিক হামলা চালানো হলে সেটি হবে কৌশলগতভাবে বড় ধরনের ভুল এবং যুক্তরাজ্য ও এর মিত্ররা রাশিয়ার কাছ থেকে চড়া মূল্য আদায় করে ছাড়বে।’
রয়টার্স বলছে, মস্কো ও কিয়েভের স্থানীয় সময় রোববার (২৩ জানুয়ারি) গভীর রাতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের এই বক্তব্য প্রকাশ করা হয়। আর তাই তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি বাসভবন ক্রেমলিন এবং ইউক্রেনের সাবেক আইনপ্রণেতা ইয়েভহেন মুরায়েভের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্য এভাবে প্রকাশ্যে আনার নজির সাধারণত না থাকলেও ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা রোধ করার জন্য সাবধানতার সাথে বিবেচনা করার পরই (গোয়েন্দা তথ্যটি) প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যের এমন বক্তব্য সামনে আসার পর গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র এমিলি হর্ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘এ ধরনের পরিকল্পনা খুবই উদ্বেগজনক। নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সার্বভৌম অধিকার ইউক্রেনের জনগণের রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ইউক্রেনের অংশীদারদের পাশে রয়েছে।’
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেনের সাবেক আইনপ্রণেতা ইয়েভহেন মুরায়েভ নিজ দেশে রাশিয়াপন্থি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কেরও বিরোধী।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে চালানো একটি জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ৪৫ বছর বয়সী এই নেতা ২০২৪ সালের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে সপ্তম অবস্থানে রয়েছেন এবং তার পক্ষে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে।
টিএম