পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে ট্রেন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকর্মীরা। আহতের সংখ্যাও অনেক। ঘটনাস্থলে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ।

দুর্ঘটনায় কবলিত ট্রেনের দুই বগির লোহার দেওয়াল একটি স্থানে মিশেছে। সেই সংযোগস্থলের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আছে ছাই রঙের একটি জিন্স। হাঁটুতে একটি বেগুনি রঙের স্কার্ফ বাঁধা। পায়ের আঙুল দিয়ে ঝরছে রক্ত। সেই ক্ষতস্থানে সাদা কাপড় বেঁধে দিলেন এক পুলিশকর্মী। শরীরের বাকি অংশ দেখা যাচ্ছে না। কীভাবে উদ্ধার করা হবে ওই যাত্রীকে?

ওই যাত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে কর্মীদের। কারণ থুবড়ে যাওয়া বগির দেওয়াল কাটতে গেলে ঝুলে থাকা পা কেটে ফেলতে হবে। এক সময় যন্ত্র দিয়ে কাটা শুরু হলো বগির দেওয়াল। ঘণ্টাদেড়েক পর কাজ একটু সামনে এগোলে যাত্রীর হাত দেখা গেল। শোনা গেল তার কথাও। হাত দেখিয়ে ওই যাত্রী বলছেন, ‘পা কাটবেন না, দোহাই। একটু পানি দিন।’

অবশেষে এক ঘণ্টা পর পা কাটা ছাড়াই ওই যাত্রীকে বের করা হয়। অজ্ঞান অবস্থায় তাকে পাঠানো হয় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে।

বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে আসামের রাজধানী গুয়াহাটির দিকে যাচ্ছিল বিকানের এক্সপ্রেস নামের এই ট্রেনটি। বিকেল ৫ টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় দুর্ঘটনায় পড়ে সেটি।

ট্রেনের ৪-৫ টি বগি দুমড়ে মুচড়ে গেছে। একটি বগির ওপর উঠে গেছে আর একটি বগি। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, ট্রেনটির ইঞ্জিনের পর থেকে ১২টি বগি দুর্ঘটনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে ৭টি বগি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটির গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রেলওয়ে বিভাগ জানিয়েছে, ট্রেনটি ছাড়ার সময় তাতে প্রায় ৭০০ যাত্রী ছিলেন। পরে বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীরা নামা-ওঠা করেন।

এমএইচএস