ওমিক্রনের ঢেউ, রোগীদের ফাইজারের বড়ি দিচ্ছে দ. কোরিয়া
করোনাভাইরাসের অতি-সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দ্রুতগতির বিস্তারে তৈরি হওয়া তীব্র উদ্বেগের মাঝে এই রোগের চিকিৎসায় মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজারের অ্যান্টিভাইরাল করোনা পিল প্যাক্সলোভিডের ব্যবহার শুরু করছে দক্ষিণ কোরিয়া। আগামী শুক্রবার থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় দেশটিতে ফাইজারের অ্যান্টিভাইরাল এই পিলের প্রয়োগ শুরু হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (কেডিসিএ) বলছে, বৃহস্পতিবার দেশের প্রায় ২৮০টি ফার্মেসি এবং ৯০টি আবাসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে বিতরণের জন্য কমপক্ষে ২১ হাজার প্যাক্সলোভিড পিল পৌঁছাবে।
বিজ্ঞাপন
এক সংবাদ সম্মেলনে কেডিসিএর কর্মকর্তা কিম কি-ন্যাম বলেন, ওমিক্রনের অত্যধিক-সংক্রমণের কারণে এই ওষুধটির তাদের জন্য অর্থপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত; যাদের গুরুতর উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যদিও তুলনামূলকভাবে এই ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতা কম।
কেডিসিএ বলছে, ওষুধটি দিনে এক হাজারের বেশি মানুষের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে। দেশটিতে এই করোনা পিল পাওয়ার অগ্রাধিকার তালিকায় আছেন, গুরুতর অসুস্থতার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগী, ৬৫ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সী এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে।
চলতি মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফাইজারের আরও ১০ হাজার প্যাক্সলোভিড পিল পৌঁছাতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। মার্কিন এই কোম্পানি বলছে, করোনায় মৃত্যুহার কমানোর পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ৯০ শতাংশ হ্রাস করে প্যাক্সলোভিড। এছাড়া পরীক্ষায় এই পিল ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও কার্যকারিতা দেখিয়েছে।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের উল্লম্ফনের কারণে অতিরিক্ত চিকিৎসার উপায় খুঁজছে দক্ষিণ কোরিয়া। বুধবার দেশটিতে নোভাভ্যাক্সের তৈরি করোনা টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
৫ কোটি ২০ লাখ মানুষের এই দেশটির করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সফলতার গল্প রয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৩০ জন এবং মারা গেছেন ৬ হাজার ২১০ জন। মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কারণে দেশটি অনেকাংশে মহামারি নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে।
কেডিসিএ বলেছে, বুধবার দেশটিতে আরও ৪ হাজার ১৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে; যাদের মধ্যে ৩৯১ জনই বিদেশ ফেরত। দেশটিতে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ এখনও অনেক কম দেখা গেলেও আগের দুই সপ্তাহের সাড়ে ১২ শতাংশের তুলনায় গত সপ্তাহে তা তিন গুণের বেশি হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯০ শতাংশকে টিকার পূর্ণ ডোজ দেওয়া হয়েছে; তাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ ইতোমধ্যে বুস্টার ডোজও নিয়েছেন।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস