করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তেই বরাবরের মতো এবারও লকডাউনের পথেই হেঁটেছে চীন। নিয়মের কড়াকড়ি আগে থেকেই জারি থাকলেও সংক্রমণ রুখতে এবার এশিয়ার এই দেশটি থেকে আরও ভয়ঙ্কর চিত্র উঠে আসছে।

যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে তাদেরকে, এমনকি গোটা এলাকায় একজনের রিপোর্ট পজেটিভ এলেও সকলকে ধাতব বাক্সে কমপক্ষে ৭ দিন বাধ্যতামূলক আইসোলেশনে রাখার মতোই ভয়ঙ্কর দৃশ্য ধরা পড়েছে চীনে।

করোনা সংক্রমণ রুখতে নিজেদের নীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এই ধাতব বাক্সে বসবাস সেই পরিবর্তনে নতুন সংযোজন। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

পজিটিভ হওয়া ব্যক্তি বা সন্দেজনক করোনা রোগীদের ধাতব বাক্সে বসবাসে বাধ্য করার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কোভিড সংক্রমিত ব্যক্তিদের বা তাদের সংস্পর্শে আসা সকলকে ধাতব বাক্সের মতো ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে একটি খাট, পানির বোতল ও একটি শৌচাগার রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শাংসি প্রদেশের জিয়ান শহরে খোলা হয়েছে এই আইসোলেশন ক্যাম্প। সেখানে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক, এমনকি গর্ভবতী নারীদেরও অন্তত দু’সপ্তাহের জন্য জোর করে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে অস্থায়ী এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলোর সামনে বাসের লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে। আর ভেতরে রয়েছেন বহু মানুষ।

চীনের জিরো কোভিড পলিসি অনুযায়ী, মাত্র এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে পুরো শহরেরই বাসিন্দাদের যেমন করোনা পরীক্ষা করানো হয়ে থাকে। তেমনই আবার একজনের রিপোর্ট পজেটিভ এলেই একই এলাকার সকল বাসিন্দাকে ধাতব বাক্সে বন্দি করে রাখা হচ্ছে। মূলত অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানো আটকাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় জিয়ান শহরের প্রায় দু’কোটি বাসিন্দাকে বাড়িতেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে। এমনকি খাবার কিনতে বাইরে বেরোনোর ওপরেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার সেখানে ১৩ জন নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

অন্যদিকে মাত্র দু’জন ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়ার পর চীনের আনিয়াং শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া মাত্র তিন জন উপসর্গহীন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় ইউচোও শহরে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছে।

টিএম