করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ ব্যাপক বৃদ্ধির মাঝেই ভারতের সবচেয়ে জনবহুল এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিরোধীদের নির্বাচনী প্রধান রণক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সাত দফায় জনবহুল এই রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে শনিবার জানিয়েছেন দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র।

বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত উত্তরাঞ্চলীয় এই রাজ্যের নির্বাচনী ফলকে আগামী ২০২৪ সালে দেশটির জাতীয় নির্বাচনের হিসেব-নিকেশের অন্যতম মাপকাঠি হিসাবে দেখা হবে।

উত্তরপ্রদেশে সাত দফার ভোটগ্রহণ শেষ হবে আগামী ৭ মার্চ। এরপর ১০ মার্চ নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

উত্তরপ্রদেশসহ মোট পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচনের তারিখ এমন এক সময় ঘোষণা করা হলো, যখন ভারতজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি চলছে।

ভারতের নির্বাচন কমিশন বলছে, দেশটির বিরোধীদল কংগ্রেসশাসিত পাঞ্জাব, বিজেপি-নেতৃত্বাধীন হিমালয় অঞ্চলের উত্তরাখণ্ড এবং পর্যটন ও খনি শিল্পের অন্যতম কেন্দ্র পশ্চিমাঞ্চলীয় গোয়ায় আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বিজেপি-শাসিত উত্তরাঞ্চলীয় মনিপুরেও দুই ধাপে—আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ও ৩ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সুশীল চন্দ্র বলেছেন, করোনার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের কারণে রাজনৈতিক দলগুলো ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী সমাবেশ এবং রোড শো করতে পারবে না।

নির্বাচনী প্রচারণা অনলাইনে চালানোর পরামর্শ দিয়ে দেশটির এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, (কমিশন) পরবর্তীতে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে এবং সেই অনুযায়ী নির্দেশনা জারি করবে।

এদিকে, শনিবারও ভারতে এক লাখ ৪১ হাজার ৯৮৬ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে; করোনায় আক্রান্তের এই সংখ্যা গত বছরের মে মাসের পর একদিনে সর্বোচ্চ। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে এই ভাইরাসে মারা গেছেন ২৮৫ জন। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষ।

গত বছর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় মহামারি মোকাবিলার কৌশল নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার। সেই সময় করোনার উল্লম্ফনের কারণে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়।

ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দেশটিতে চলমান তৃতীয় ঢেউয়ে করোনা সংক্রমণ গত মে মাসের দৈনিক ৪ লাখ ১৪ হাজারের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে ।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস