বুধবার উত্তর কোরিয়া যে ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করেছে সেটি একটি হাইপারসনিক মিসাইল এবং অত্যাধুনিক এই অস্ত্রটি সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে পিয়ংইয়ং। পরীক্ষামূলকভাবে মিসাইল নিক্ষেপের একদিন পর বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) দেশটি একথা জানায় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

এর আগে উত্তর কোরিয়ার মিসাইল নিক্ষেপের বিষয়টি বুধবারই প্রকাশ্যে আনে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। তবে সেসময় দেশ দু’টি ওই মিসাইলকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হতে পারে বলে জানিয়েছিল।

বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, বুধবার কোরিয়া উপদ্বীপের পূর্বে সমুদ্রে একটি হাইপারসনিক মিসাইলের পরীক্ষা করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমের দাবি, মিসাইলটি ৭০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদ করতে পারে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হওয়ায় এর লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা অনেক বেশি। এনিয়ে উত্তর কোরিয়া দ্বিতীয়বার হাইপারসনিক মিসাইলের পরীক্ষা করলো বলেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই হাইপারসনিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে আসছে। এসব দেশের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা সফলও হয়েছে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার মতো অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ কীভাবে একের পর এক এমন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

পিয়ংইয়ংয়ের সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন অবশ্য জানিয়েছেন, দেশকে রক্ষা করার জন্য এ ধরনের আরও অস্ত্র তৈরি করবে উত্তর কোরিয়া। তার দাবি, উত্তর কোরিয়ার আত্মরক্ষার অধিকার আছে। যদিও একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ।

সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত বছরের অক্টোবর মাসের শুরুতে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর আগে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম পরীক্ষা চালায় দেশটি। এছাড়া গত সেপ্টেম্বর মাসে পৃথকভাবে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোরও অভিযোগ ওঠে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের পর খুব দ্রুত উপরে উঠে আবার দ্রুত নেমে আসে। এরপর আনুভূমিকভাবে বায়ুমন্ডলের মধ্যেই চলতে থাকে এবং চলমান অবস্থাতেও গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে, যা ব্যালিস্টিক মিসাইল থেকে ভিন্ন।

টিএম