প্রতীকী ছবি

পরমাণু অস্ত্রের আরও প্রসার না করতে এবং ভবিষ্যতে পরমাণু যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকতে একমত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি বাসভবন ক্রেমলিন থেকে সোমবার (৩ জানুয়ারি) দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বৈশ্বিক এই পাঁচ পরাশক্তি দেশ একথা জানায়।

বিবৃতিতে পরমাণু অস্ত্র এবং পরমাণু যুদ্ধের বিরুদ্ধে শপথ গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

চলতি মাসেই পরমাণু অস্ত্র সম্পর্কিত একটি বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা ছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে সেই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী দেশ সোমবার এই বিবৃতি প্রকাশ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এশীয় পরাশক্তি চীনও এই বিবৃতির অংশ। বিবৃতি প্রকাশের পর চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য প্রকাশ করেছে। সেখানে তিনি বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র ও যুদ্ধের বিষয়ে পরাশক্তি দেশগুলো একমত হওয়ার ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা কিছুটা হলেও কমবে।

পাঁচ পরাশক্তির দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোনো দেশ যাতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। যাদের হাতে এই অস্ত্র আছে, তারা কখনও এই অস্ত্র ব্যবহার করবে না। পরমাণু শক্তির প্রদর্শন সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধ এড়িয়ে যাওয়া এবং কৌশলগত ঝুঁকি কমিয়ে আনাই হচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের প্রাথমিক দায়িত্ব। বিবৃতির ভাষায়, ‘পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ফলে যেহেতু সুদূরপ্রসারী পরিণতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে, তাই এই অস্ত্র কেবল প্রতিরক্ষামূলক উদ্দেশেই ব্যবহৃত হওয়া উচিত।’

বিবৃতিতে ওই পাঁচটি দেশ বলেছে, ‘আমরা নিশ্চিত করছি যে, পরমাণু যুদ্ধ হলে তাতে কেউই জয়লাভ করবে না এবং আর তাই এই যুদ্ধ কখনও হওয়াই উচিত না।’

এর আগে ১৯৭০ সালে পরমাণু সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ১৯৬৮ সালে সেই চুক্তির খসড়া তৈরি হয়েছিল। সেই চুক্তিতে বিশ্বের ১৯১টি দেশ স্বক্ষর করে। উত্তর কোরিয়া অবশ্য পরে সেই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। দক্ষিণ আফ্রিকা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে ওই চুক্তির মধ্যে প্রবেশ করে এবং নিজেদের পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস করে।

সম্প্রতি একাধিক বিষয় নিয়ে বিশ্বের একাধিক দেশের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। একদিকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর তীব্র বিরোধ চলছে। ইউক্রেন সীমান্তে বিশাল সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

অন্যদিকে তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক এই পাঁচ পরাশক্তির বিবৃতি এবং শপথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র : রয়টার্স, ডয়চে ভেলে

টিএম