ছবি: আলজাজিরা

করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রনের প্রভাবে প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কাতারে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যতম নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. সোহা আল বায়াত সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, যে গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে খুব শিগগিরই করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হতে যাচ্ছে সেখানে।

রোববার টেলিভিশনে সম্প্রচার হওয়া ওই সাক্ষাৎকারে কাতারের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের টিকাদান কর্মসূচির প্রধান নির্বাহী ডা. সোহা আল বায়াত বলেন, ‘গত নভেম্বর থেকেই কাতারে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী হওয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে এই হার আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। আমাদের হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, নতুন এই আক্রান্তদের অধিকাংশই ওমিক্রনের শিকার।’

মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের ছোট একটি দেশ কাতার। আয়তন মাত্র ১১ হাজার ৫৭১ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা ২৮ লাখ ৮১ হাজার।

গত ২ বছর আগে শুরু হওয়া মহামারিতে মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশগুলো সবচেয়ে বিপর্যয়কর সময় পার করছে, সেসবের মধ্যে অন্যতম কাতার। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত কাতারে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৫২ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ৬১৮ জনের।

রোববারের সাক্ষাৎকারে ডা. বায়াত আরও বলেন, ‘যদিও এখন পর্যন্ত কাতারে ওমিক্রনে আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ কোনও রোগীর তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বর্তমানে যে গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে খুব দ্রুতই দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে যাবে।’

তবে সংক্রমণের ব্যাপকতা যেমন আছে কাতারে, তেমনই দেশটিতে গতিশীল রয়েছে টিকাদান কর্মসূচিও। এমনকি ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের বুস্টার ডোজও দিচ্ছে কাতারের সরকার। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত কাতারের টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০ লাখেরও বেশি ডোজ।

কিন্তু তারপরও সংক্রমণ বাড়ছে দেশটিতে। এ সম্পর্কে সাক্ষাৎকারে ডা. বায়াত বলেন, ‘মূলত দুই ধরনের মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এক- যারা টিকার ডোজ নেননি; তাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে এবং দুই- যারা ছয় মাস বা তার বেশি সময় আগে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন।

চলতি বছর ফুটবল বিশ্বকাপের আসর বসবে কাতারে। এছাড়া সম্প্রতি ফর্মুলা ওয়ান রেস চ্যম্পিয়নশিপ ও ফিফা আরব কাপের আসরও অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশটিতে।

যদিও সদ্য শেষ হওয়া দু’টি আসরে কেবলমাত্র টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করা ব্যক্তিরাই দর্শক হিসেবে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন। তারপরও সামাজিক দূরত্ববিধি মানার কোনও প্রবণতা তাদের মধ্যে দেখা যায়নি।

রোববারের সাক্ষাৎকারে এই ব্যাপারটির সমালোচনা করে ডা. বায়াত, ‘করোনার এবারের যে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে, তার প্রধান কারণ জনগণের অসচেতনতা, বা হেলাফেলাপূর্ণ মনোভাব।’

সূত্র: আলজাজিরা।

এসএমডব্লিউ