ইউক্রেন ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা চান বাইডেন, পাল্টা হুমকি পুতিনের
ইউক্রেন ইস্যুসহ পূর্ব ইউরোপে নিরাপত্তা নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত আড়াইটার পরে উভয় নেতা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ফোনে কথা বলেন।
এসময় ইউক্রেন ইস্যুতে প্রয়োজন হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথা নিশ্চিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অবশ্য বাইডেনকে উদ্দেশ করে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে তা বিশাল ভুল হবে এবং মস্কো-ওয়াশিংটন সম্পর্কে ফাঁটল সৃষ্টি করবে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশকে ঘিরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও উদ্বেগের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বৈশ্বিক এই দুই পরাশক্তি দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেনকে নিয়ে এই সংকট সম্প্রতি আরও গভীর হয়েছে কারণ ক্রেমিলন নিরাপত্তার বর্ধিত নিশ্চয়তা চাইছে এবং তার দাবিকে জোরালো করতে পরীক্ষামূলক ভাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
মূলত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অনুরোধের প্রেক্ষিতেই এই ফোনালাপটি আগামী ১০ জানুয়ারি জেনেভায় অনুষ্ঠিতব্য উচ্চপর্যায়ের আলোচনার আগেই অনুষ্ঠিত হলো। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবারের এই ফোনালাপ ওয়াশিংটন সময় বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয় এবং শেষ হয় ৫০ মিনিট পরে। মস্কোতে সেসময় প্রায় মধ্যরাত। এই দুই নেতার মধ্যে চলতি মাসে এটিই ছিল দ্বিতীয় ফোনালাপ।
পূর্ব ইউরোপে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে কিংবা ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া আক্রমণ চালালে মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে বৃহস্পতিবারের ফোনালাপে বাইডেন তা আবারও নিশ্চিত করেছেন। তবে ওয়াশিংটনের এমন পদক্ষেপ হবে ‘বিশাল ভুল’ এবং এটি রুশ-মার্কিন সম্পর্কে ফাঁটল সৃষ্টি করবে বলে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকফ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের (নিষেধাজ্ঞা আরোপ) পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভাঙ্গন ধরাবে। তার ভাষায়, ‘এটি হবে বড় ধরনের ভুল যার পরিণতি হবে মারাত্মক।’
রাশিয়া পরিষ্কার করেই বলেছে যে, ইউক্রেনকে কখনোই সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাশিয়া লিখিতভাবে চায়। এমনকি সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক এই প্রদেশে ন্যাটোর সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হবে না; এমন প্রতিশ্রুতিও চায় মস্কো। অবশ্য বাইডেন প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, রাশিয়ার এই দাবিগুলো কার্যকর হতে পারে না।
অবশ্য বৃহস্পতিবারের এই ফোনালাপের আগেই হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল যে, ফোনালাপে ইউক্রেন সংকট নিরসনে পুতিনকে কূটনৈতিক পথ খোলা থাকার কথাই মূলত জানিয়ে দেবেন বাইডেন। তবে রাশিয়ার এসব দাবি আগামী মাসে জেনেভা বৈঠকে আলোচনা করা হবে এবং এটি এখনও পরিষ্কার নয় যে, সংকট সমাধানে বাইডেন পুতিনকে ঠিক কি ছাড় দিতে পারেন।
এদিকে এই ফোনালাপের আগে নববর্ষ এবং ক্রিসমাসের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে একটি বার্তা পাঠান প্রেসিডেন্ট পুতিন। অন্যান্য নেতাকে পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তার সঙ্গে এটিও ক্রেমলিনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
টিএম