পিওন, গাড়িচালক ও নিরাপত্তারক্ষী পদে শূন্যপদ মাত্র ১৫টি। আর এই ১৫টি শূন্যপদের বিপরীতে আবেদন জমা দিয়েছেন প্রায় ১১ হাজার প্রার্থী। পিওন পদে চাকরির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম শ্রেণি পাস চাওয়া হলেও স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি, এমবিএ, ইঞ্জিনিয়ারিং পাস, এমনকি আইন পাস ও বিচারক পদে নিয়োগ হওয়ার অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিরাও আবেদন করেছেন।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে। এর মাধ্যমে মূলত রাজ্যটির কর্মসংস্থানের ভয়ঙ্কর চিত্র উঠে এসেছে। বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে সম্প্রতি পিওন, গাড়িচালক ও নিরাপত্তারক্ষী পদে জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত শনিবার ও রোববার সেই পদে আবেদন ও পরীক্ষা দিতেই ভিড় জমান প্রায় ১১ হাজার বেকার যুবক-যুবতী। শুধু মধ্যপ্রদেশ থেকেই নয়, পার্শ্ববর্তী উত্তরপ্রদেশ থেকেও অনেকে সেখানে চাকরির পরীক্ষা দিতে যান।

চাকরির পরীক্ষা দিতে সেখানে যাওয়া এক যুবক জানান, তিনি বিজ্ঞানে স্নাতক, কিন্তু আবেদন করেছেন পিওন পদের জন্য। যাদের পিএইচডি রয়েছে, তারাও এই লাইনে দাঁড়িয়েছেন বলে জানা যায়।

অন্যদিকে আইন বিভাগ থেকে পাস করা এক যুবক গাড়ি চালকের পদে আবেদন করেছেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিচারক হওয়ার পরীক্ষায় অংশ নেবেন। তিনি বলেন, ‘টাকার এতো অভাব যে বই কেনার টাকাও থাকে না। ভাবলাম এখানে চাকরি পেয়ে গেলে যদি কিছুটা অর্থ সংকট দূর করতে পারি।’

এদিকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত, এমনকি বাইরের রাজ্য থেকেও বেকার যুবকরা চাকরির খোঁজ করতে আসায় প্রশ্ন উঠেছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সাম্প্রতিক বক্তৃতা ঘিরে। কয়েক দিন আগেই তিনি একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘আমরা প্রতি বছর এক লাখ যুবক-যুবতীকে চাকরি দেবো। যে পদগুলো দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকা পড়ে রয়েছে, সেগুলো পূরণ করতে কোনো অবহেলা করা হবে না।’

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সবাই চায় সরকারি চাকরি করতে, কিন্তু প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। তবে সকলের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে মধ্যপ্রদেশে ফুটপথে দোকান চালু নিয়ে একটি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য ১৫ লাখ আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৯৯ হাজার আবেদন গৃহীত হয়। আবেদনকারীদের ৯০ শতাংশই স্নাতক পাস ছিলেন।

টিএম