ছবি: বিজনেস স্ট্যন্ডার্ড

যুক্তরাষ্ট্রের কোভিড ত্রাণ তহবিল থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১ হাজার কোটি (১০০ বিলিয়ন) ডলার চুরি হয়েছে। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।

করোনা মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব নাগরিক চাকরি হারিয়েছেন কিংবা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদেরকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য জন্য ২০২০ সালে কোভিড ত্রাণ তহবিল গঠন করেছিল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। ‘মার্চ ২০২০ কেয়ার্স অ্যাক্ট, পিপিপি’ নামের একটি আইনের আওতায় করা হয়েছিল এ তহবিল।

তহবিলে থাকা অর্থের পরিমাণ ৩৪ লাখ কোটি (৩ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন) ডলার। এখন পর্যন্ত তহবিল থেকে ৩ শতাংশ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।

বিতরণকৃত অর্থ থেকেই ঘটেছে বিশাল এই চুরির ঘটনা। তহবিলের ছাড় দেওয়া অর্থের যে অংশটি মহামারির কারণে চাকরি হারানো নাগরিকদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল- অধিকাংশ চুরি হয়েছে সেখান থেকেই।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমিক বিভাগ চাকরি হারানো বেকার নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ তোলার পর এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ টি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটিতেই তহবিলের অর্থ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে ৯০০ টি চুরির ঘটনা উদঘাটন ও তদন্ত করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এবং চুরিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ১০০ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সামনে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে উল্লেখ করেছেন কর্মকর্তারা।

২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৮ জন এবং এই রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৮ লাখ ৩০ হাজার ৯৯০ জনের।

যুক্তরাষ্ট্রের জনজীবনের ওপর চলা এই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই পড়েছে দেশটির অর্থনীতির ওপরও। লকডাউন ও কঠোর করোনা বিধিনিষেধের কারণে লক্ষ-কোটি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন, ছোটখাট খুচরা ব্যবসা করে যারা জীবিকা অর্জন করতেন- মহামারির কারণে তাদেরও উপার্জন একরকম বন্ধ হয়ে যায়।

এই পরিস্থিতিতে সরকার যখন ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, মার্কিন জনগণের কাছে সেটি ব্যাপকমাত্রায় গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল।

তাই সাম্প্রতিক এই বিশাল চুরির তথ্য সামনে আসায় বেশ বিব্রত অবস্থায় পড়েছে মার্কিন সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রশাসন চুরির তদন্ত কার্যক্রমকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে উল্লেখ করে গোয়েন্দা কর্মকর্তা ডটসন এপিকে বলেন, ‘আমরা কি চুরি-জালিয়াতি চিরতরে বন্ধ করতে পারব? পারব না; আমরা বড়জোর যা করতে পারি, তা হলো- এই জঘন্য কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা যুক্ত- তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা এবং উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া। এখন আমরা এই কাজই করছি।’

এসএমডব্লিউ