ছবি: এনডিটিভি

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, করোনা টিকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা তিন মাস পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে সক্ষম। তারপরই কার্যকারিতা কমতে থাকে এই টিকার।

ব্রাজিল ও স্কটল্যান্ডের সরকারি ডাটাবেস থেকে ৪ কোটি ২০ লাখ মানুষের তথ্য নিয়ে তা পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা। যাদের তথ্য তারা পর্যালোচনা করেছেন, তাদের সবাই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন। আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশও পেয়েছে সেই গবেষণা প্রতিবেদন।

প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন মাস পর থেকে কমতে থাকে এই টিকার সুরক্ষা। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর তাতে কিছু দিনের জন্য ছেদ পড়ে; কিন্তু দুই সপ্তাহ পর ফের কমা শুরু করে সুরক্ষা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, টিকার সুরক্ষা কমার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে করোনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ঝুঁকি, এমনকি এ রোগে মৃত্যুঝুঁকিও। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার চার মাসের মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু ঝুঁকি তিন গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়, পাঁচ মাস পর এই ঝুঁকি বাড়ে ৫ গুণ।

গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য ও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গের অধ্যাপক আজিজ শেখ ভারতের বার্তাসংস্থা পিটিআইকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘মহামারিকে ঠেকানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি হচ্ছে টিকা। তাই যখন আপনি জানতে পারেন যে, টিকা নেওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যেই তার কার্যকারিতা কমে যাচ্ছে- সেটি স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক।’

এছাড়া, টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে টিকা গ্রহীতাদের দেহে করোনা প্রতিরোধী সুরক্ষার মাত্রা টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের সমান সমান পর্যায়ে পৌঁছে যায় বলেও উল্লেখ করা হয়ে প্রতিবেদনে।

গবেষক দলের অপর সদস্য শ্রীনিবাস কাতিকিরেড্ডি পিটিআইকে বলেন, ‘আমরা কিন্তু কোনোভাবেই টিকাগ্রহণকে নিরুৎসাহিত করছি না। কেউ যদি ভাবেন- সুরক্ষা শেষ হয়ে যাবে, তাই টিকা নেওয়ার দরকার নেই- তাহলে তা খুবই ভুল ভাবনা হবে।’

‘আমাদের এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো জনগণকে টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ নিতে উদ্বুদ্ধ করা। কারণ, ইতোমধ্যে এটি প্রমাণিত যে, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বুস্টার ডোজ ৯০ শতাংশেরও বেশি কার্যকর।’

এসএমডব্লিউ