কাজের সন্ধানে মুম্বাই গিয়ে পতিতাবৃত্তির শিকার বাংলাদেশি তরুণী
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে এক বাংলাদেশি তরুণীকে জোরপূর্বক আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায় দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। রাজ্যটির মুম্বাই শহরের ডিবি মার্গ থানার পুলিশ ওই দু’জনকে আটক করেন বলে রোববার (১৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিড ডে।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূক্তভোগী ওই বাংলাদেশি তরুণীর বয়স ২০ বছর এবং কাজের সন্ধানে শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বাইয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তির শিকার হওয়ার পর তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই দুই অভিযুক্তকে আটক করে মুম্বাইয়ের ডিবি মার্গ থানার পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশি ওই তরুণী অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তরা পুলিশের কাছে তার বাংলাদেশি পরিচয় প্রকাশের হুমকি দিয়ে তাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। এভাবে টানা কয়েক মাস তাকে নির্যাতন করা হয়। এরপরই সাহস করে ডিবি মার্গ থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অবশ্য তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হলেও একজন পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০ বছর বয়সী ভুক্তভোগী ওই তরুণীর বাড়ি বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলার জামালপুর গ্রামে। ১৪ বছর বয়সে তার বিয়ে হয় এবং ১৬ বছর বয়সে তিনি সন্তানের মা হন। একপর্যায়ে স্বামী পরিত্যাক্তা হন তিনি।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, স্বামী পরিত্যাক্তা হওয়ার পর ঢাকায় চলে যান ওই তরুণী। কিন্তু সেখানে জীবিকা উপার্জনে ব্যর্থ হয়ে বেশ কিছু নারীর সহায়তা নিয়ে সীমান্ত পার হয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় চলে আসেন। সেখানে তাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়।
দুই বছর পর ওই তরুণী সেখান থেকে পালিয়ে যান এবং কাজের সন্ধানে কলকাতা থেকে মুম্বাই চলে আসেন। মুম্বাইয়ে সনু কুমার নামে এক দালালের সাথে পরিচিত হন তিনি।
তরুণীর অভিযোগ, মুম্বাইয়ের নাগপাড়া এলাকায় একটি ঘরে ওই দালাল তাকে আটকে রাখে এবং বেশ কয়েক মাস তার ওপর নির্যাতন করে। পরে গত ৯ ডিসেম্বর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
মুম্বাইয়ের ডিবি মার্গ পুলিশ স্টেশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ৩০ বছর বয়সী রবীন্দ্র কুমার যাদব এবং ৩৬ বছর বয়সী অশোক পিটো নামে দুই অভিযুক্তকে আমরা আটক করি। তৃতীয় অভিযুক্ত সনু কুমার পলাতক রয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।’
টিএম