ইরাকের এরবিলে ব্যাপক বর্ষণ-বন্যা, মৃত অন্তত ৮
প্রবল বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট বন্যায় ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কুর্দিশের রাজধানী এরবিলে অন্তত ৮ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন ও নিখোঁজ আছেন আরও বহুসংখ্যক।
নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
কুর্দিশের গভর্নর ওমিদ খোশনৌ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এরবিলের এই দুর্যোগের তথ্য জানিয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হওয়া তুমুল বর্ষণে ইতোমধ্যে এরবিলের অধিকাংশ আবাসিক এলাকা ডুবে গেছে।
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে কুর্দিশের আঞ্চলিক পত্রিকা রুদাও গভর্নরের বরাত দিয়ে উল্লেখ করেছে- নিহতদের মধ্যে ৭ জন মারা গেছেন বৃষ্টির ফলে আকস্মিক বন্যাজনিত কারণে, বাকি একজনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে।
এছাড়া আহত হয়েছেন বহুসংখ্যক মানুষ, কয়েকজন নিখোঁজও আছেন। বস্তুগত ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে তা এখনও হিসেব করা হয়নি, তবে বিবৃতিতে খোশনৌ জানিয়েছেন- ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল।
কুর্দিশের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র সারকাওয়াত কারাচ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেন, ‘আকস্মিক এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচতে এরবিলের বহুসংখ্যক বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা তাদেরকে সহযোগিতা করছেন।’
‘বেশ কয়েকজন এখন নিখোঁজ আছেন। তাদের সন্ধান পাওয়ার জন্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমাদের শঙ্কা- নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এরবিলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা গেছে, বিভিন্ন সড়কে কর্দমাক্ত জলস্রোত বয়ে চলেছে। সড়কে প্রায় এক কোমর পানিতে ডুবে থাকা বাস-ট্রাক-ট্যাঙ্কারগুলো ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির পানিতে ভিজছে।
এই পরিস্থিতিতে নগরবাসী যেন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন খোশনৌ। আবহাওয়া দফতরের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে কুর্দিশের গভর্নর বলেন, বৃষ্টিপাত এখনই থামছে না। অল্প সময়ের ব্যবধানে আরও বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এরবিলে।
ইরাকের আবহাওয়া বরাবরই চরমভাবাপন্ন। গ্রীষ্মের সময় দেশটিতে গায়ে ফোস্কা পড়ে যাওয়ার মত গরম পড়ে। অনিয়মিত বৃষ্টিপাত ও অতিরিক্ত উষ্ণতার জন্য গত কয়েক বছর ধরে খরা চলছে দেশটির বিভিন্ন এলাকায়।
আবার যখন বৃষ্টিপাত হয়, তখন তা রূপ নেয় তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে।
অতিরিক্ত উষ্ণতা ও নিয়মিত খরার কারণে দেশটির অধিকাংশ এলাকার মাটি শক্ত, গাছপালার সংখ্যাও কমছে। যখন তুমুল ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়, কঠিন মাটি দ্রুত সেই পানি শোষণ করতে পারে না, ফলে দেখা দেয় আকস্মিক বন্যার মতো দুর্যোগ।
সূত্র: আলজাজিরা
এসএমডব্লিউ