ব্রিটিশদের জন্য ভ্রমণবিধি কঠোর করল ফ্রান্স
ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের নতুন রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় এই দেশটির যাত্রীদের জন্য করোনা বিধি কঠোর করেছে ফ্রান্স। দেশটির সরকারের মুখপাত্র গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল সাম্প্রতিক এক ঘোষণায় এ তথ্য দেন বলে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
নতুন সরকারি আদেশে ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ফরাসি নাগরিক ও ফ্রান্সে যাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে, কেবল তারাই প্রবেশ করতে পারবেন ফ্রান্সে।
বিজ্ঞাপন
কিছুক্ষেত্রে অবশ্য ছাড় দেওয়া হয়েছে; যেমন- বর্তমানে ফ্রান্সে থাকা ব্রিটেনের কোনো নাগরিক যদি দেশে ফিরে যেতে চান, তিনি তা পারবেন। ব্রিটেনের কোনো নাগরিক যদি তার কোনো নিকটাত্মীয়ের শবযাত্রায় অংশ নিতে চান, তাকে সেই অনুমতি দেওয়া হবে। এছাড়া চিকিৎসাগত কারণ বা অতি জরুরি প্রয়োজনে কেউ যুক্তরাজ্য থেকে কেউ যদি ফ্রান্সে আসতে চায়, সেক্ষেত্রেও ছাড় দেবে ফরাসি সরকার।
তবে ব্রিটেন থেকে যারা ফ্রান্সে প্রবেশ করবেন- তাদেরকে প্রবেশের ২৪ ঘণ্টা আগে করোনা পিসিআর কিংবা অ্যান্টিজেন টেস্ট করাতে হবে এবং টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া ব্যক্তিদেরই ফ্রান্সে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
যারা করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেননি, তাদেরকে ফ্রান্সে প্রবেশের পর হোটেলে বাধ্যতামূলক ৭ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তবে তারা যদি ফ্রান্সে দ্বিতীয়বার টেস্ট করান এবং সেখানেও নেগেটিভ রিপোর্ট পান, সেক্ষেত্রে এই কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ হবে ৪৮ ঘণ্টা।
এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যাতিক্রমের তালিকায় ফেল হয়েছে ট্রাক ড্রাইভারদের। তাদের ক্ষেত্রে করোনা টেস্ট করানোর বাধ্যবাধকতা ও কোয়ারেন্টাইন আদেশ প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছে ফরাসি সরকার।
বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের বিএফএমটিভিতে দেওয়া বক্তব্যে গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো ফ্রান্সে ওমিক্রনের বিস্তার যতটুকু সম্ভব সীমিত রাখা। এ কারণেই আমরা কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া সাধারণ ব্রিটেনবাসীর জন্য ফ্রান্সে ভ্রমণের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করেছি।’
যুক্তরাজ্যে প্রথম ওমক্রিনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ২৭ নভেম্বর। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ১১ হাজার ৩৭২ জন।
গত ১৩ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জানান, সক্রিয় এই করোনা রোগীদের অর্ধেকই ওমিক্রনে আক্রান্ত।
আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জন ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে সম্প্রতি একজনের মৃত্যুও হয়েছে। সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে গত ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
ফ্রান্সে অবশ্য এখনও ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক কম। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭৮ জন।
এসএমডব্লিউ