নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদিত তিনটি করোনা টিকার সুরক্ষা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম বলে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে। তবে এই তিন টিকার একটি বুস্টার ডোজ দেওয়া হলে ওমিক্রনের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ সুরক্ষা ফিরিয়ে আনে। যুক্তরাষ্ট্রে ল্যাবরেটরিতে চালানো এই পরীক্ষার ফলাফল মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে।

দেশটির ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল (এমজিএইচ), হার্ভার্ড এবং এমআইটির গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদিত মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের তিনটি ভ্যাকসিন ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কেমন কার্যকার তা জানতে ওই গবেষণা করেছেন। তাদের এই গবেষণা এখন পর্যন্ত পির রিভিউড কোনো সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়নি।

ওই তিন কোম্পানির টিকা যারা নিয়েছেন তাদের শরীর থেকে রক্তের নমুনা নেওয়ার পর ল্যাবরেটরিতে সম্পাদিত ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে পরীক্ষা চালানো হয়। এতে গবেষকরা দেখতে পান, দুই ডোজের মডার্না অথবা ফাইজার-বায়োএনটেক এবং এক ডোজের জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়ার পর ওমিক্রনের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কম মাত্রার অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে।

তবে সম্প্রতি যারা এই তিন টিকার একটি বুস্টার ডোজ হিসেবে নিয়েছেন, তাদের শরীর থেকে নেওয়া রক্তের নুমনায় ওমিক্রনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

বিজ্ঞানীরা অবশ্য করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট আগের অন্যান্য ধরনের তুলনায় অধিক-সংক্রামক বলে সতর্ক করে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তারকারী অতি-সংক্রামক ডেল্টার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সংক্রামক। তবে শিগগিরই ডেল্টাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ওমিক্রন।

সম্প্রতি প্রকাশিত অন্যান্য গবেষণার ফলাফলের সঙ্গে মিল রয়েছে মার্কিন বিজ্ঞানীদের ল্যাবরেটরিতে চালানো পরীক্ষার এই ফলে। সোমবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিরুদ্ধে দুই ডোজের ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারছে না।

গত সপ্তাহে বায়োএনটেক এবং ফাইজার জানায়, ল্যাবরেটরিতে চালানো এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, তাদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার তৃতীয় ডোজ নতুন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে নিস্ক্রিয় করতে সক্ষম। তবে দুই ডোজে এই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডির মাত্রা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম তৈরি হয়।

তবে নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে নিজেদের ভ্যাকসিন কেমন সুরক্ষা দিচ্ছে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসন। তবে নতুন গবেষণার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জনসন এবং মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও মডার্না কোনো সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এসএস