পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে চলতি বছর বিশ্বজুড়ে রেকর্ড সংখ্যক ২৯৩ জন সাংবাদিক আটক হয়েছেন। এছাড়া সংবাদ প্রকাশের কারণে বিশ্বব্যাপী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ২৪ জন সাংবাদিক।

সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার অলাভজনক বৈশ্বিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) নতুন প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেবল সংবাদ প্রকাশের কারণে চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ২৪ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া আরও ১৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, তবে সেক্ষেত্রে এটি নিশ্চিত নয় যে- সংবাদ প্রকাশের কারণেই তারা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন কি না। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের ওপর হামলা নিয়ে বৃহস্পতিবার সিপিজে’র এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক এই সংস্থাটি বলছে, ২০২১ সালে পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে বিশ্বব্যাপী কারাবন্দি হয়েছেন ২৯৩ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক আটকের ঘটনা ঘটেছে চীনে। অন্যদিকে ২০২০ সালে সারা বিশ্বে কারাবন্দি সাংবাদিকের সংখ্যা ছিল ২৮০ জন।

সংস্থাটি বলছে, সাংবাদিকদের জেলে পাঠানোর পেছনে দেশ ভেদে কারণগুলো ছিল ভিন্ন। তবে সাংবাদিক আটকের বেশিরভাগ কারণই ছিল রাজনৈতিক এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা।

এছাড়া সংবাদ প্রকাশ বা পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে চলতি বছর বিশ্বব্যাপী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ২৪ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকী এবং মেক্সিকান সাংবাদিক গুস্তাভো সানচেজ ক্যাবরেরাও রয়েছেন। পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় গত জুলাই মাসে আফগানিস্তানে দানিশ সিদ্দিকীকে এবং জুন মাসে মেক্সিকোতে গুস্তাভো সানচেজকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক আটকের ঘটনা ঘটেছে চীনে। বছরের শুরু থেকে গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫০ জন সাংবাদিককে আটক করেছে দেশটি। এরপরই দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মিয়ানমারে আটক করা হয়েছে ২৬ সাংবাদিককে। এছাড়া মিসরে ২৫ জন, ভিয়েতনামে ২৩ জন এবং বেলারুশে ১৯ জন সাংবাদিককে আটকের ঘটনা ঘটেছে।

সিপিজে’র নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এটি নিয়ে টানা ৬ বছর বিশ্বজুড়ে রেকর্ডসংখ্যক সাংবাদিক আটকের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে সিপিজে। এছাড়া বিশ্বের কতৃত্ববাদী বিভিন্ন দেশের সরকার তথ্য প্রকাশের লাগাম টেনে ধরতে চাইছে এবং এ কাজে তারা ক্রমবর্ধমান ভাবেই কঠোর রূপ ধারণ করছে।

টিএম