ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য ভুঁইফোড় বেসরকারি এক সংস্থাকে অর্থের বিনিময়ে ওই কর্মকর্তা কাজ পাইয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর তা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের বাংলা সংবাদমাধ্যম দৈনিক স্টেটসম্যানের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। সেই কার্যক্রমের উদ্বোধন হওয়ার আগেই বিতর্কের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের উপ-দূতাবাস দফতর।

স্টেটসম্যান বলছে, কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন ভিসা প্রসেসিংয়ের দায়িত্ব যে প্রতিষ্ঠানকে দিতে যাচ্ছে সেটি ভুঁইফোড় বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজধানী নয়াদিল্লি-ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানের অতীতে এ ধরনের কাজ করার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পর্যাপ্ত জনবল এমনকি অবকাঠামোও নেই। কিন্তু মাত্র আট মাস আগে তৈরি হওয়া এই কোম্পানি এক লাখ টাকা মূলধন বিনিয়োগ করে বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের ৯০ কোটি টাকার কাজ পেতে যাচ্ছে।

টেন্ডার ছাড়াই ওই প্রতিষ্ঠানটিকে বেছে নেওয়ার জন্য কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ১৫ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে, বলছে স্টেটসম্যান। ভারতীয় এই দৈনিক বলছে, প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি টাকা ওই কর্মকর্তাকে দিয়েছেন। অবশিষ্ট ১০ কোটি টাকা চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মাত্র এক লাখ টাকা মূলধনের একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৯০ কোটি টাকার কাজ কীভাবে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দূতাবাসের সূত্রের বরাত দিয়ে স্টেটসম্যান বলছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবেসে নতুন ওই প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ভিসা প্রসেসিং কাজ শুরু করতে ব্যাপক তৎপর হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।

চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই দিল্লির এই প্রতিষ্ঠান ভিসা জমা নেওয়ার জন্য কলকাতার সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে একটি অফিস ভাড়া নিয়েছে।

বাংলাদেশের প্রথম বিদেশি মিশন ১৯৭১ সাল থেকে কলকাতায় চালু রয়েছে। সেখানে গত অর্ধ শতাব্দি ধরে ভিসা প্রসেসিং কাজ চলছে। স্টেটসম্যান বলছে, অন্য কোনো কূটনৈতিক অফিস থেকে বাংলাদেশের ভিসা করাতে ভারতীয়দের অর্থ গুণতে না হলেও, কলকাতা থেকে ভিসা করাতে এবার প্রত্যেক ভারতীয়কে ৮০০ থেকে ৮৫০ রুপি ফি বাবদ পরিশোধ করতে হতে পারে।

তবে ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে স্টেটসম্যান যোগাযোগ করলেও উপদূতাবাসের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এই সংবাদমাধ্যম।

এসএস