ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাত তুঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করতে পারে। তাই সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে রুশ আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য তৈরি হচ্ছে ওয়াশিংটন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করলে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার (১ ডিসেম্বর) লাটভিয়ার রিগাতে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে মন্ত্রী-পর্যায়ের বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইউক্রেনে হামলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র খুবই উদ্বিগ্ন।

ইউক্রেনের অভিযোগ, সীমান্তে বহু সামরিক যানবাহন, সেনা এবং ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম মজুত করেছে রাশিয়া। চলতি বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার রাশিয়া এভাবে সেনা ও সমরাস্ত্র মোতায়েন করলো।

অ্যান্টনি ব্লিংকেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে হামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন কি না তা যুক্তরাষ্ট্র জানে না। আমরা জানি, রাশিয়া যেভাবে সীমান্তে সেনা ও অস্ত্র মোতায়েন করেছে, তাতে ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত নিলে খুব কম সময়ের মধ্যে তা কার্যকর করা যাবে।’

বৃহস্পতিবার সুইডেনে নিরাপত্তা ও সহযোগিতা বিষয়ক সম্মেলন হবে। সেখানে ব্লিংকেনের সঙ্গে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই আলোচনায় ইউক্রেনের প্রসঙ্গ উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বুধবার জানিয়েছেন, রাশিয়ায় যে সব মার্কিন কূটনীতিক তিন বছরের বেশি সময় ধরে আছেন, তাদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ২৭ জন রুশ কূটনীতিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারই জবাব দিলো রাশিয়া।

চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছিল। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েন করার পরেই দুই দেশের সম্পর্ক আবার খারাপ হয়। চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন, ন্যাটো যদি ইউক্রেনে অবকাঠামো বৃদ্ধি করে, তাহলে তারা সীমা লঙ্ঘন করবে।

তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনার সময় তাদের স্পষ্ট করে বলা হবে, রাশিয়ার সীমান্তের কাছে তারা যেন সেনা বা অস্ত্র মোতায়েন না করে। অন্যদিকে পুতিনের এমন বক্তব্যের পর বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, উত্তেজনা কমাতে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে চান।

বৈরী এই দুই দেশের সম্পর্ক গত কয়েক দশকের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে তলানিতে পৌঁছেছে। গত মার্চে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রুশ প্রেসিডেন্টকে খুনি বলেও মন্তব্য করেছিলেন। মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, সাইবার হামলা, ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে নজিরবিহীন অবনতির মাঝে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সর্বশেষ বক্তব্য সামনে এলো।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

টিএম