মার্কিন দূতাবাসের পুরনো কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করছে রাশিয়া
রাশিয়ায় মার্কিন দূতাবাসের যেসব কর্মকর্তা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে রয়েছেন, তাদেরকে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে রাশিয়া ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে মস্কো। খবর রয়টার্সের।
দুই দেশের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক তিক্ততার মধ্যে গত সপ্তাহে রাশিয়ার ২৭ জন কূটনীতিককে তাদের পরিবারের সদস্যসহ ৩০ জানুয়ারির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন সরকার। পাশাপাশি, এ বিষয়ক সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব কূটনীতিককে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা পরবর্তী তিন বছর যুক্তরাষ্ট্রে কূটনীতিক হিসেবে কাজ করতে পারবেন না।
বিজ্ঞাপন
এক সপ্তাহের মধ্যেই তার পাল্টা ব্যবস্থা নিল রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে, ‘মার্কিন দূতাবাসের যেসব কর্মকর্তা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে মস্কোতে আছেন, তাদের আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে রাশিয়া ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের কূটনীতিকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তাতে বাধ্য হয়েই এই নির্দেশ দিচ্ছে সরকার।’
যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার কূটনীতিকদের ওপর যে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রত্যাহার না করা হলে মস্কো আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মারিয়া জারাকোভা।
এ সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, ‘যদি ২০২১ সালের ১ জুলাইয়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করে, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যত জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে, তার চেয়েও বেশি সংখ্যক মার্কিন নাগরিক, যারা বর্তমানে কর্মসূত্রে রাশিয়ায় আছেন- তাদের বহিষ্কার করা শুরু করবে মস্কো।’
মস্কোর মার্কিন দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে রয়টার্সকে প্রতিক্রিয়া জানাতে সম্মত হননি।
গত কয়েক বছর ধরে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর খারাপ হচ্ছে। ২০১৭ সালেও যেখানে মস্কো ও রাশিয়ার অন্যান্য প্রদেশে কর্মরত মার্কিন কূটনীতির সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২০০, সেখানে বর্তমানে দেশটিতে কর্মরত আছেন মাত্র ১২০ জন মার্কিন কূটনীতিক।
এছাড়া, গত কয়েক বছরে রাশিয়ায় কয়েকটি মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধ করেছে ওয়াশিংটন। এগুলোর মধ্যে ভ্লাদিভস্তক ও ইয়েকাতেরিনবার্গে মত গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলেটও আছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কয়েক দশকজুড়ে তৎকালীণ সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চরম তিক্ততা চলেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভাষায় এই তিক্ততাকে বলা হয় শীতল যুদ্ধ বা কোল্ডওয়্যার।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর কয়েক বছরে দুই দেশের মধ্যকার তিক্ততার কিছুটা প্রশমন হয়েছিল। কিন্তু এক সময়ের সোভিয়েত অঙ্গরাজ্য ও বর্তমানের স্বাধীন দেশ ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে রাশিয়ার সামরিক স্থাপণা নির্মাণ নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফের তিক্ততা শুরু হয়েছে দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে।
এসএমডব্লিউ