বিশ্বের অন্তত ১৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রন ‘অত্যন্ত ঝুঁকি’ তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। পাশাপাশি ভাইরাসের এই ধরনকে মোকাবিলায় বিশ্বকে দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থা।

সোমবার জেনেভায় ডব্লিউএইচওর সদর দফতর থেকে ওমিক্রন নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। বিবৃতিতে ১৯৪টি সদস্যদেশকে টিকাদান কর্মসূচির গতি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে ডব্লিউএইচও। সংক্রমণের নতুন ঢেউ দেখা দিলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে; সে বিষয়ে পরিকল্পনাও দ্রুত নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘মূল করোনাভাইরাস ও তার অন্যান্য রূপান্তরিত ধরনের তুলনায় ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনের সংখ্যা অনেক বেশি। সংস্থাটির আশঙ্কা, এটি মহামারির পুরো চিত্র আরও বিপর্যয়কর করে তুলতে পারে।’

আগের সব ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় সম্ভাব্য অতি-সংক্রামক ওমিক্রন গত বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর থেকে এই ভ্যারিয়েন্ট অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, ব্রিটেন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরায়েল, ইতালি এবং নেদারল্যান্ডস ও স্কটল্যান্ডে শনাক্ত হয়েছে।

ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ হিসেবে তালিকাভূক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ‘এই ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতার মাত্রা বোঝার জন্য কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে।’

শনাক্ত হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা বা অন্য কোনো দেশে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেছেন—এমন সংবাদ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি এখনও আসেনি ধরনটির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও। তবে এ পর্যন্ত যে পরিমাণ তথ্য উপাত্ত বিজ্ঞানীদের হাতে পৌঁছেছে, তাতে এটি মূল করোনাভাইরাস ও তার অন্যান্য ধরনের তুলনায় অনেক বিধ্বংসী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতিতেও তার প্রতিফলন পাওয়া গেছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘এই ধরনটির প্রভাবে দৈনিক সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে এবং সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেতে পারে করোনায় গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যাও।’

‘যদি এমন হয়, সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসার চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়বে বিশ্বজুড়ে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে করোনায় মৃত্যুর হারও। যেসব দেশে টিকাদান কম হয়েছে, সেই সব দেশের বয়স্ক লোকজন বিশ্বে এই মুহূর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন’, বিবৃতিতে বলেছে ডব্লিউএইচও।

তবে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে প্রথম সতর্ক ঘণ্টা বাজানো দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি রোববার বলেছেন, তার কাছে চিকিৎসা নেওয়া সন্দেহভাজন কয়েক ডজন ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর শরীরে কেবলমাত্র মৃদু উপসর্গ দেখেছেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাড়াই তারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

এসএমডব্লিউ/এসএস