জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন এসপিডি দলের ওলাফ শলৎস। স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ নভেম্বর) তিনি শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে কোয়ালিশন চুক্তি প্রকাশ করেছেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর একাধিক ক্ষেত্রে আমূল সংস্কার করতে চায় নতুন এই জার্মান সরকার।

সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, চরম গোপনীয়তার মধ্যে আলোচনা চালিয়ে জার্মানির তিনটি রাজনৈতিক দল পরবর্তী জোট সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে। সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, উদারপন্থি এফডিপি ও পরিবেশবাদী সবুজ দলকে এবার শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে কোয়ালিশন চুক্তির অনুমোদন করতে হবে। এরপরই মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করে ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে জার্মানির পরবর্তী সরকার কার্যভার গ্রহণ করতে পারবে।

আগামী ৬ ডিসেম্বর ফেডারেল জার্মানির নবম চ্যান্সেলর হিসেবে শপথ নিতে পারেন ওলাফ শলৎস। সেইসঙ্গে অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটবে। মেরকেলের রক্ষণশীল ইউনিয়ন শিবিরকে সংসদের বিরোধী আসনে বসতে হবে।

বুধবার ‘ট্রাফিক লাইট কোয়ালিশন’-এর তিন শরিক দলের শীর্ষ নেতারা সাংবাদিকদের সামনে ১৭৭ পাতার কোয়ালিশন চুক্তি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের প্রশ্নের জবাব দেন। শলৎস বলেন, ১৯২৪ সালে বার্লিনের পটসডামার প্লাৎস এলাকায় যখন প্রথম ট্রাফিক লাইট বসানো হয়েছিল, অনেকে তখন সেটির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন।

আজ নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক দিশা দেখানোর ক্ষেত্রে ট্রাফিক লাইট অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি ‘ট্রাফিক লাইট’ জোটের মাধ্যমে জার্মানিতে একই রকম যুগান্তকারী ভূমিকা পালনের আশা প্রকাশ করেন।

একাধিক ক্ষেত্রে আমূল সংস্কারের মাধ্যমে জার্মানির আধুনিকীকরণের ওপর জোর দেন তারা। জলাবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে কার্বন নির্গমন কমানো, দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োগ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্কের মতো একাধিক ক্ষেত্রে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে এই জোট। কার্যত বাড়তি সরকারি ঋণ ছাড়াই এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে তাদেরকে।

তবে সবার আগে জার্মানি তথা ইউরোপের ভয়াবহ করোনা সংকট মোকাবিলার ওপর জোর দিতে চায় এই জোট। সরকার গঠনের আগেই পার্লামেন্টে সংক্রমণ সুরক্ষা আইন সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনে এই তিন দল কাজ শুরু করেছে। সংকটের মোকাবিলা করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার মতো আরও পদক্ষেপ নিয়ে নতুন সরকার অবিলম্বে করোনা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়।

এদিকে জার্মানির নতুন মন্ত্রিসভার তালিকা এখনও চূড়ান্ত না হলেও সম্ভাব্য কিছু নাম উঠে আসছে। সম্ভাব্য মন্ত্রিসভায় সমান সংখ্যক নারী ও পুরুষ সদস্যদের স্থান দিতে চান ওলাফ শলৎস। নির্বাচনে সবুজ দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আনালেনা বেয়ারকক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দলীয় নেতা রোব্যার্ট হাবেক অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলর হতে পারেন।

এফডিপি দল শেষ পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বের ওপর ‘অধিকার’ কায়েম করতে সফল হওয়ায় দলের শীর্ষ নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার অর্থমন্ত্রী হবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

টিএম