ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ

ইথিউপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশে তাইগ্রের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে সরাসরি যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। রাজধানী আদ্দিস আবাবার পরিবর্তে বর্তমানে তাইগ্রেতে আছেন তিনি।

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ফানা নিউজ। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আবি আহমেদ যতদিন যুদ্ধক্ষেত্রে থাকবেন, ততদিন তার অনুপস্থিতিতে সরকারের দৈনন্দিন রুটিন কাজগুলো দেখবেন দেশটির উপ প্রধানমন্ত্রী ডেমেকে মেকোনেন হাসেন।

গত সোমবার (২২ নভেম্বর) এক টুইটবার্তায় তাইগ্রেতে সরকার ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে চলমান যুদ্ধে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন আবি। বার্তায় তিনি বলেন, ‘তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রেই আমাদের সাক্ষাৎ হোক। এখন সময় এসেছে আত্মত্যাগের মাধ্যমে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার।’

গত বছরের নভেম্বরে তাইগ্রেতে ইথিওপিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে আকস্মিক হামলা হয়। হামলার পর দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এই প্রদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টকে (টিপিএলএফ) ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে আইনের শাসন ফেরাতে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন আবি আহমেদ, যিনি ২০২০ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

এর মধ্যে গত মাসে টিপিএলএফ হুমকি দিয়েছে, খুব দ্রুত রাজধানী আদ্দিস আবাবা দখলের অভিযান শুরু করবে তারা।

বিশ্বের যেসব দেশের কোনো সমুদ্রবন্দর নেই, তাদের মধ্যে অন্যতম ইথিউপিয়া। বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য প্রতিবেশী দেশ জিবুতির সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটি।

দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইথিওপিয়া ও জিবুতির সংযোগ সড়কের দখল নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে।

২০১৮ সালে আবি আহমেদ ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার আগ পর্যন্ত তাইগ্রে তো বটেই, দেশের কেন্দ্রীয় সরকারকেও নিয়ন্ত্রণ করত টিপিএলএফ। তাই ২০২০ সালের নভেম্বরে সেনাবাহিনী যখন অভিযান শুরু করে, পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে এই রাজনৈতিক দলটিও।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনাবাহিনী ও টিপিএলএফের সংঘাতে গত এক বছরে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছেন কয়েক লাখ।

ফলে, এই ধরনের চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া ব্যাতীত আবি আহমেদের সামনে আর কোনো বিকল্প ছিল না বলে মনে করেছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ।

এসএমডব্লিউ