সুস্থ হয়ে উঠলে মনিকা তার নতুন ঠিকানায় যেতে পারবে

রাশিয়ান কুকুর মনিকা। যার জীবন থমকে গিয়েছিল। চার পায়ের থাবা থেতলে যাওয়া অবস্থায় তাকে পাওয়া যায় এক জঙ্গলে। পরে এক পশুপ্রেমী তাকে উদ্ধারের পর সুস্থ করে তোলার লড়াই শুরু করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর কৃত্রিম থাবা লাগানোর চিকিৎসা শুরু হয় মনিকার; এই চিকিৎসার জন্য অনলাইনে অর্থ-সংগ্রহের ক্যাম্পেইন শুরু করেন ওই পশুপ্রেমী।

শত শত মানুষের পাঠানো অর্থে অবশেষে চার পায়ে কৃত্রিম থাবা লাগানোর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে মনিকার। হাসপাতালে দুই সপ্তাহ কাটানোর পর বর্তমানে ওই পশুপ্রেমীর বাসায় ফিরেছে মনিকা।

ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, চার পায়ে ব্যয়বহুল কৃত্রিম টাইটানিয়াম থাবা লাগানোর পর রুশ কুকুর মনিকা এখন নতুন জীবনের জন্য প্রস্তুত। দুই সপ্তাহের ধকলের পর এখন হালকা দুর্বল হয়ে পড়েছে মনিকা। কিন্তু সে এখন নিজ পায়ে আবারও দাঁড়াতে পারছে।

গোর্শকভ নামের এক পশু চিকিৎসক মনিকার পায়ে চ্যালেঞ্জিং অস্ত্রোপচার করেছেন

সের্গেই গোর্শকভ নামের এক পশু চিকিৎসক মনিকার পায়ে চ্যালেঞ্জিং অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। তিনি বলেছেন, ভাগ্য এবং অভিজ্ঞতা এই অস্ত্রোপচারে ভূমিকা রেখেছে।

সাইবেরীয় শহর নোভোসিবিরস্কের ৩৩ বছর বয়সী এই চিকিৎসক এখন পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি প্রাণীর কৃত্রিম থাবা লাগিয়েছেন। এর মধ্যে একটি বিড়ালও আছে। কিন্তু এবারই প্রথম তিনি কুকুরের পায়ে অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন।

জীবন বদলে দেওয়া এই অস্ত্রোপচারের আগে মনিকা অনেক পথ পাড়ি দিয়েছে। গোর্শকভের ক্লিনিক থেকে ৪ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণে রুশ শহর ক্রাসনোডারের কাছের এক জঙ্গলে তাকে স্বেচ্ছাসেবীরা খুঁজে পেয়েছিলেন। এ সময় তার চার পা ছিল রক্তাক্ত, থেঁতলে যাওয়া।

গোর্শকভ বলেছেন, মনিকার সঙ্গে কী ঘটেছিল, তা কেউই জানেন না। কিছু স্বেচ্ছাসেবীরা ধারণা করছেন, কেউ হয়তো নিষ্ঠুরভাবে তার পায়ের থাবা কেটে দিয়েছে।

মনিকার বয়স দুই থেকে চার বছরের মধ্যে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাজার হাজার পথের কুকুরের মতো ভাগ্য বরণ করতে পারতো মনিকা। তবে সৌভাগ্যবশত সে ক্রাসনোডারের স্বেচ্ছাসেবী আলা লিওনকিনার যত্নশীল হাতে পড়েছে।

রাশিয়ার ক্রাসনোডার শহরের কাছের এক জঙ্গলে মনিকাকে খুঁজে পেয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবীরা

লিওনকিনা বলেছেন, প্রায় এক বছর ধরে তিনি এবং তার একজন বন্ধু মনিকার দেখাশোনা করেছেন। মনিকার অবস্থা ভয়াবহ ছিল বলে জানান তিনি।

মনিকাকে পাওয়ার পর তিনি গোর্শকভ ক্লিনিকের কথা শুনতে পান। পরে মনিকার অস্ত্রোপচারের অর্থ অনলাইনে সংগ্রহ করার জন্য ক্যাম্পেইন শুরু করেন তিনি। এক মাসের মধ্যে অসুস্থ মনিকার চিকিৎসার জন্য ৪ লাখ রাশিয়ান রুবল (প্রায় ৫ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করেন তিনি। লিওনকিনা বলেন, বিমানে পাশে বসিয়ে মনিকাকে সাইবেরিয়া নিয়ে যান।

গোর্শকভ বলেছেন, মনিকার হাড় বেড়ে উঠবে এবং কৃত্রিম অঙ্গগুলোর সাথে হরিণের শিংয়ের মতো খাপ খাইয়ে নেবে। সুস্থ হয়ে উঠলে মনিকা তার নতুন ঠিকানায় যেতে পারবে।

সূত্র: এএফপি।

এসএস