করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর স্থগিত করা টিকা রফতানি কার্যক্রম আবারও চালু করেছে ভারত। শুরুতে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল ও ইরানে টিকা রফতানি করবে দেশটি। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। 

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে টিকা রফতানি বন্ধ করে ভারত সরকার। এর পরের ৮ মাসে দেশে ১০০ কোটির কাছাকাছি মানুষেকে টিকার আওতায় আনার পর এখন ওই নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করেছে ভারত। টিকা রফতানিতে যেসব বাণিজ্যিক চুক্তি করা হয়েছিল সেগুলোও সাময়িকভাবে স্থগিত ছিল এতদিন।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড টিকার ওপর ভরসা করেই টিকা কার্যক্রম শুরু করেছিল বাংলাদেশ। এরপর হঠাৎই ভারত চুক্তি থেকে সরে এলে টিকা সংকটে পড়ে বাংলাদেশ; পরে চীনসহ অন্যান্য উৎস থেকে টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হলে সংকট কাটিয়ে পুরোদমে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়।

এদিকে, ভারতে এরইমধ্যে আরও বেশ কিছু টিকা অনুমোদন পেয়েছে। এগুলো হলো- কোভাভ্যক্স, করবিভ্যাক্স, জিকভডি, জেনোভাস এমআরএনএ ভ্যাকসিন।  

ভারতে প্রায় ১০০ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনা গেলেও এখনও বড় সংখ্যক মানুষের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া বাকি রয়েছে। তবে এরইমধ্যে তারা যেহেতু টিকা রফতানি শুরু করে দিচ্ছে, তাই ধরে নেওয়া হচ্ছে ভারত মনে করছে টিকার পর্যাপ্ত উৎপাদনে এখন সক্ষম তারা।

তবে ভারতে এখনও করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা রয়ে গেছে। এরসঙ্গে দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে হঠাৎ করে যেমন টিকার সঙ্কট দেখা দিয়েছিল তেমন সঙ্কট আবারও তৈরি হতে পারে বলেও ঝুঁকি রয়েছে।

ভারত বায়োটেক তাদের কোভ্যাক্সিন টিকা উৎপাদনে ধীরগতি দেখিয়েছে। সংকটের ওই সময় সেরাম যদি বাড়তি চাপ নিয়ে টিকা উৎপাদনে না যেত, তবে ভারত এত মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পারতো না। ভারতে মোট যে টিকা দেওয়া হয়েছে এর ৮৮ শতাংশই কোভিশিল্ড।

টিকা নিয়ে ভারত বা বাংলাদেশের মতো দেশগুলো প্রাথমিক সংকট কাটিয়ে উঠলেও আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ, লাতিন আমেরিকা, এমনকি এশিয়ার কিছু দেশও এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত টিকা পাচ্ছে না। টিকার এই বাজার ধরতে বেশ দাপটের সঙ্গে চীন এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের টিকা উৎপাদনকারীদের অবস্থানও বেশ শক্ত। তবে প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত টিকার বাজার ধরতে পারেনি রাশিয়া।

এনএফ