তিনি একাই বিক্রি করেছেন ১৩০ নারীকে
আফগানিস্তানে ১৩০ নারীকে দাস হিসেবে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ভালো বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে প্রতারণার অভিযোগে দেশটির উত্তরাঞ্চল থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে আফগান পুলিশ। আফগান কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
১৩০ নারীকে দাস হিসেবে বিক্রি ও এই অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় জাওজান প্রদেশের তালেবানের পুলিশ প্রধান দামুল্লাহ সিরাজ। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি জানান, সোমবার রাতে জাওজান প্রদেশ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও জানান, ‘আমরা এখনও তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। আরও কিছু সময় পার হলেও আমরা এই বিষয়টির ব্যাপারে আরও তথ্য বের করতে পারবো।’
জাওজান প্রদেশের একটি জেলার পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ সরদার মুবারিজ এএফপি’কে জানান, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি কেবল আর্থিক সংকটে রয়েছে এমন নারীদেরকেই টার্গেট করতো। আর নিজেদের আর্থিক পরিস্থিতি উন্নতি করতে ইচ্ছুক ওই নারীরা সহজেই অভিযুক্তের ফাঁদে পা দিতেন।
তিনি আরও বলেন, দরিদ্র এসব নারীদেরকে ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি সম্পদশালী স্বামী খুঁজে দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। এরপর তিনি নারীদেরকে পৃথক প্রদেশে নিয়ে যেতেন এবং সেখানে তাদেরকে দাস হিসেবে বিক্রি করা হতো। এই ভাবে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি প্রায় ১৩০ জন নারীকে বিক্রি করেছেন।
২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য বিশ্বের কোনো দেশই এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থা আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ বারবার সতর্ক করেছে যে, বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আফগানিস্তান। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে এবং প্রচণ্ড শীতের মধ্যে লাখ লাখ আফগান অনাহারের মধ্যে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি, চলমান খাদ্য সংকট এবং শীত মৌসুমের শুরু আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে গেছে।
অবশ্য ক্ষমতায় আসার পর থেকে খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যেও বড় বড় শহরগুলোতে ডাকাতি ও অপহরণের মতো অপরাধ বন্ধে চেষ্টা করে যাচ্ছে তালেবান।
টিএম